ফিলিস্তিনি পরিবারকে পুড়িয়ে হত্যা, ইসরায়েলি তরুণের যাবজ্জীবন

দখলকৃত পশ্চিমতীরের এক ফিলিস্তিনি দম্পতি ও তাদের শিশু সন্তানকে পুড়িয়ে হত্যার দায়ে এক ইসরায়েলি দখলদারকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে ইসরায়েলের একটি আদালত। সোমবার (১৪ সেপ্টেম্বর) ইসরায়েলের মধ্যাঞ্চলীয় লড শহরের জেলা আদালত এই রায় ঘোষণা করেন। এতে আমিরাম বেন-উলিয়েল (২৫) নামের ওই তরুণকে তিন দফা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। ২০১৫ সালে ওই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।আদালতের এক শুনানীর সময় আমিরাম বেন-উলিয়েল

পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনি জনগোষ্ঠীর ওপর ইহুদি দখলদারদের হামলার ধারাবাহিকতায় নাবলুস শহরের নিকটবর্তী দুমা গ্রামে সাদ ও রিহাম দম্পতির বাড়িতে হামলা চালানো হয়। এতে ১৮ মাসের শিশু সন্তান আলি দাওয়াবশেহসহ তার বাবা-মা আগুনে পুড়ে মারা যায়। এই দম্পতির আরেক ছেলে আহমাদ মারাত্মক দগ্ধ হলেও শেষ পর্যন্ত প্রাণে বেঁচে যায়।

ওই ঘটনায় গত মে মাসে আমিরাম বেন-উলিয়েলকে দোষী সাব্যস্ত করে ইসরায়েলের আদালত। ২১ বছর বয়সে চালানো হামলার জন্য সোমবার তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আদালতের রায়ে বলা হয়েছে, বেন উলিয়েলের কর্মকাণ্ড ছিল ‘নিখুঁতভাবে পরিকল্পনা করা এবং তার ধারণ করা উগ্রবাদী মতাদর্শ এবং বর্ণবাদ থেকে উৎসারিত’। রায়ে বলা হয়েছে, আইনে বর্ণিত সর্বোচ্চ সাজার কাছাকাছি দণ্ড দেওয়া হয়েছে তাকে।

আদালতে বেন উলিয়েলের দাবি ছিল মাসখানেক আগে এক ইসরায়েলিকে হত্যার প্রতিশোধ নিতে ২০১৫ সালের ওই হামলা চালানো হয়। আদালতে প্রমাণ হয়েছে, সেদিন সাদ ও রিহাম দম্পতির বাড়ি ছাড়াও দুমা গ্রামের আরেকটি বাড়িতেও হামলা চালায় ওই যুবক। বাড়ি দুটির দেয়ালে স্প্রে-পেইন্টিং দিয়ে ‘প্রতিশোধ’ এবং ‘রাজা মসিহ দীর্ঘজীবি হোন’ লেখার পর  পেট্রোলবোমা ছুড়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। প্রথমে একটি বাড়িতে পেট্রোলবোমা ছুড়লেও ওই বাড়িতে সেদিন কেউ না থাকায় তারা বেঁচে যায়। এরপরই সে সাদ ও রিহাম দম্পতির শোবার ঘরের জানালা দিয়ে পেট্রোলবোমা ছুড়ে মেরে পালিয়ে যায়। আর সেই আগুনে দগ্ধ দুই সন্তানসহ দগ্ধ হন ওই দম্পতি।

সোমবারের রায় ঘোষণার পর ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের তরফে বলা হয়েছে, কোনও দণ্ডতেই ওই অপরাধের কোনও প্রায়শ্চিত্ত হয় না। নিহত শিশুটির দাদা হুসেইন দাওয়াবশেহ আদালতের বাইরে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আদালতের সিদ্ধান্তে আমাদের কী হবে? এতে আহমাদের কী হবে? এই রায়ে সে কিছুই ফিরে পাবে না।’