আরব লীগের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করবে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ?

যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্ততায় পর পর দুটি উপসাগরীয় দেশ ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার ঘোষণা দেওয়ার পর ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন ফিলিস্তিনি নেতারা। আরব দেশগুলোর জোট আরব লীগের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগও তুলছেন তারা। সোমবার (১৪ সেপ্টেম্বর) মন্ত্রিসভার সাপ্তাহিক বৈঠকের পর ফিলিস্তিনের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ ইশতায়েহ জানিয়েছেন, আরব লীগের সঙ্গে সম্পর্ক পুনর্বিবেচনা করতে প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসকে সুপারিশ করবে তার সরকার। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।গত সপ্তাহে ইসরায়েল বিরোধী প্রস্তাব অনুমোদনে ব্যর্থ হয় আরব লীগ

১৯৭৯ সালে মিসর ও ১৯৯৪ সালে জর্ডানের পর তৃতীয় আরব রাষ্ট্র হিসেবে গত ১৩ আগস্ট যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার চুক্তি স্বাক্ষরের ঘোষণা দেয় সংযুক্ত আরব আমিরাত।  এই চুক্তির নিন্দা জানিয়ে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের আনা একটি প্রস্তাব গত সপ্তাহে অনুমোদন করতে ব্যর্থ হয় আরব লীগ। জোটের এই ব্যর্থতার পর গত ১১ সেপ্টেম্বর চতুর্থ আরব রাষ্ট্র হিসেবে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার ঘোষণা দেয় বাহরাইন।

১৫ সেপ্টেম্বর (মঙ্গলবার) হোয়াইট হাউসে অনুষ্ঠিত হবে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার এসব চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠান। এতে উপস্থিত থাকবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু, সংযুক্ত আরব আমিরাতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল্লাহ বিন জায়েদ এবং বাহরাইনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল-লতিফ আল-জায়ানি।

মন্ত্রিসভার সাপ্তাহিক বৈঠকের পর সোমবার ফিলিস্তিনি প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ ইশতায়েহ বলেন, ‘আরব রাষ্ট্রগুলোর ইতিহাসে মঙ্গলবার একটি জঘণ্য দিন হতে যাচ্ছে আর এদিন প্রতিষ্ঠান হিসেবে আরব লীগেরও পরাজয় হবে।’ তিনি বলেন, ‘আরব নিষ্ক্রিয়তার প্রতীক হয়ে উঠেছে আরব লীগ।’

উল্লেখ্য, ফিলিস্তিনি নেতারা ১৯৬৭ সালে যুদ্ধের পর থেকে পশ্চিম তীর, গাজা উপত্যকা এবং পূর্ব জেরুজালেমে অবৈধভাবে দখলকৃত সব এলাকা থেকে ইসরায়েলের অপসারণ এবং সেখানে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে চায়। আরব লীগও দীর্ঘদিন থেকে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার বিনিময়ে এসব এলাকা থেকে তাদের অবৈধ অপসারণ করার তাগিদ দিয়ে আসছে। ২০০২ সালে জোটটির নেওয়া আরব শান্তি উদ্যোগে পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার কথা বলা হয়। তবে ইসরায়েল কখনোই সেই প্রস্তাব বাস্তবায়নে উদ্যোগ নেয়নি। আর বেশিরভাগ আরব রাষ্ট্র ওই উদ্যোগের প্রতি প্রতিশ্রুতিশীল থাকার কথা প্রকাশ্যে বলে আসলেও নানাভাবে ইসরায়েলের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।