লাদাখ সীমান্তে সেনাবাহিনী প্রস্তুত রয়েছে: রাজনাথ

চীন-ভারত চলমান সীমান্ত সংঘাতের পালে হাওয়া দিলেন ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। মঙ্গলবার (১৫ সেপ্টেম্বর) লাদাখ সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে পার্লামেন্টে দেওয়া বক্তব্যে নিজেদের সামরিক প্রস্তুতির প্রসঙ্গ তুলে ধরেছেন তিনি। সার্বভৌমত্বের ইস্যুকে দিল্লি গুরুত্ব সহকারে দেখে উল্লেখ করে ভারতীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেছেন, দেশের স্বার্থে যেকোনও পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য সেনাদের প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

রাজনাথ

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদন অনুযায়ী, এদিন রাজনাথ আরও বলেছেন, চীন-ভারত সীমান্ত ইস্যুটি এখনও অমীমাংসিত। ভারত শান্তিপূর্ণভাবে সীমান্ত ইস্যুর সমাধান করতে চায়। বেইজিংয়ের পক্ষ থেকেও একইরকম আচরণ প্রত্যাশা করে দিল্লি।

সীমান্তে চীনা সেনা প্রবেশ নিয়ে শুরু থেকেই সরকারকে আক্রমণ করে আসছে কংগ্রেসসহ বিরোধী দলগুলো। বিশেষ করে মোদি সরকারের ‘ব্যর্থতা’ নিয়ে সরব হয়েছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। এমন অবস্থায় মঙ্গলবার লোকসভা অধিবেশনের দ্বিতীয় দিনে লাদাখ ইস্যুতে বক্তব্য দেন রাজনাথ। তিনি বলেন, বেইজিংকে দিল্লি জানিয়ে দিয়েছে যে জোর করে চীন-ভারত সীমান্ত বদলে দেওয়ার কোনও চেষ্টা গ্রহণযোগ্য হবে না।

রাজনাথ বলেন, দুই দেশের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা (এলএসি) এবং সংশ্লিষ্ট এলাকায় চীন বিপুল সংখ্যক সেনা ব্যাটালিয়ন এবং অস্ত্রশস্ত্র মোতায়েন করেছে। পূর্ব লাদাখ, গোগরা, কংকালা, প্যানগং লেকের উত্তর ও দক্ষিণ তীরে বেশ কিছু বিরোধপূর্ণ এলাকা রয়েছে। এসব এলাকায় ভারতীয় সেনাবাহিনী পাল্টা মোতায়েন সম্পন্ন করেছে।

বেইজিংকে হুঁশিয়ার করে তিনি বলেন, ‘আমরা চীনের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ সমাধানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, তবে যেকোনও ঘটনা মোকাবিলার জন্য সশস্ত্র বাহিনী প্রস্তুত রয়েছে।’

রাজনাথের দাবি, 'এর আগেও সীমান্তে উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে একাধিকবার৷ কিন্তু শান্তিপূর্ণভাবে তা মিটে গিয়েছে৷ কিন্তু এ বছর পরিস্থিতি একেবারে আলাদা৷ তবে ভারত শান্তিপূর্ণভাবে সমস্যা মেটাতে বদ্ধপরিকর৷ লাদাখ সীমান্তে প্রায় ৩৮ হাজার বর্গ কিলোমিটার চীন বেআইনিভাবে দখলের চেষ্টা করে যাচ্ছে৷ তবে আমি নিশ্চিত করতে চাই, আমাদের বাহিনীর উৎসাহ উদ্দীপনা তুঙ্গে৷ এ বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই৷ প্রধানমন্ত্রীর লাদাখ সফর দেশবাসীকে বার্তা দিয়েছে, সেনাবাহিনীর সঙ্গে রয়েছে গোটা দেশ৷'

এদিন ভারতীয় সেনাদের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করে রাজনাথ বলেন, 'আমাদের জওয়ানরা বেইজিংকে উপযুক্ত জবাব দিয়েছে। গালওয়ানে সংঘর্ষে ভারতের ২০ জওয়ানের মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু চীনের পক্ষে তার চেয়ে অনেক বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আবার যেখানে সংযম দেখানোর দরকার, জওয়ানরা সেখানে সংযম ও ধৈর্য দেখিয়েছে। এই শৃঙ্খলা ও শৌর্যের জন্য শুধু সংসদ নয়, সারা দেশবাসীর ভারতীয় সেনার পাশে দাঁড়ানো উচিত।'

এদিকে, লোকসভায় রাজনাথের বক্তৃতার পরই ভারত-চীন সীমান্ত ইস্যু নিয়ে আলোচনার দাবিতে ওয়াকআউট করেন কংগ্রেস দলীয় লোকসভা সদস্যরা। পরে গান্ধী মূর্তির পাদদেশে বিক্ষোভ করেন তারা।