গ্রিসের সঙ্গে আলোচনায় প্রস্তুত তুরস্ক, ইইউ’র নিষেধাজ্ঞা নিয়ে হুঁশিয়ারি

ভূমধ্যসাগরের বিবাদপূর্ণ এলাকা নিয়ে গ্রিসের সঙ্গে আলোচনায় বসার ব্যাপারে সম্মত হয়েছে তুরস্ক। রবিবার (২০ সেপ্টেম্বর) তুর্কি প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র জানিয়েছেন, শিগগিরই এ আলোচনা শুরু হতে পারে। তবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন নেতাদের আসন্ন বৈঠক থেকে যদি তুরস্কের ওপর নিষেধাজ্ঞার হুমকি দেওয়া হয় তবে তা কাজে দেবে না বলেও হুঁশিয়ার করেছেন তিনি। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

গত ১০ আগস্ট গ্রিসের ক্রিট দ্বীপের পার্শ্ববর্তী ভূমধ্যসাগর এলাকায় গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য জরিপ কাজে জাহাজ মোতায়েন করে তুরস্ক। জবাবে ইউরোপীয় মিত্র ও আরব আমিরাতের সহযোগিতায় ভূমধ্যসাগরের এ অঞ্চলটিতে নৌ-মহড়ার আয়োজন করে গ্রিস। ফলে দু’দেশের মধ্যে উত্তেজনা বাড়তে থাকে। জাহাজটি ভূমধ্যসাগরে গ্রিসের মালিকানাধীন বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে জরিপকাজ চালাচ্ছিল বলে দাবি করে গ্রিস। এ দাবি প্রত্যাখ্যান করে তুরস্ক জানায়, জাহাজটি যে অঞ্চলে অনুসন্ধান চালাচ্ছিল সেটি তাদেরই মালিকানাধীন এলাকা। গত সপ্তাহে আঙ্কারা জাহাজটি সরিয়ে নেয়। দাবি করা হয়, রুটিন মেনটেনেন্সের অংশ হিসেবে এর চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। পরে তুরস্কের পক্ষ থেকে বলা হয়, গ্রিসের সঙ্গে উত্তেজনা কমাতে কূটনৈতিক পথ খোলা রেখেছে তারা।

বার্তা সংস্থা দোগানকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তুর্কি প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র ইব্রাহিম কালিন বলেন, ‘এ মুহূর্তে আলোচনা শুরু করার উপযুক্ত পরিবেশ বিরাজ করছে। অনুসন্ধানজনিত আলোচনা আবারও শুরু হতে পারে।’
আগামী ২৪ ও ২৫ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিতব্য ইউরোপীয় কাউন্সিলের বৈঠকের শীর্ষ এজেন্ডায় রয়েছে তুরস্ক ও গ্রিসের মধ্যকার বিবাদের বিষয়টি। ফ্রান্স ও গ্রিসের মতো দেশগুলো তুরস্কের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য সংস্থাটির ওপর চাপ প্রয়োগ করছে।

এ ব্যাপারে কালিন বলেন, ‘তুরস্কের বিরুদ্ধে ব্ল্যাকমেইল কিংবা নিষেধাজ্ঞার হুমকি কোনও কাজে দেবে না। এরইমধ্যে ইউরোপীয় রাজনীতিবিদদের এ কথাটা বুঝে যাওয়া উচিত।’

সিরিয়ার গৃহযুদ্ধের ভয়াবহতায় তুরস্কে আশ্রয় নিয়েছে লাখ লাখ শরণার্থী। এই শরণার্থীদের অনেকেই তুর্কি-গ্রিস সীমান্ত দিয়ে ইউরোপের অন্যান্য দেশে প্রবেশের চেষ্টা করে থাকে। ইইউ’র সঙ্গে আঙ্কারার সমঝোতা অনুযায়ী শরণার্থীদের ইউরোপে প্রবেশ ঠেকানোর অঙ্গীকার করেছিল তুরস্ক। তবে গ্রিস-তুর্কি বিবাদে ইউরোপীয় ইউনিয়ন মোটা দাগে গ্রিসের পক্ষ নেওয়ায় এ পরিস্থিতিতে তুরস্কও অবস্থান পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয়।