ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিষেধাজ্ঞা পক্ষপাতমূলক: তুরস্ক

লিবিয়ার ওপর আরোপিত জাতিসংঘের অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা ভঙ্গের অভিযোগে তুরস্কের একটি প্রতিষ্ঠানের ওপর ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) আরোপ করা নিষেধাজ্ঞার নিন্দা জানিয়েছে আঙ্কারা। তুরস্ক বলছে, এই পদক্ষেপ ইউরোপীয় জোটটির দ্বৈতনীতি এবং পক্ষপাতমূলক অবস্থান। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।noname

গত জুনে সমুদ্র এলাকায় বিরোধপূর্ণ একটি ঘটনায় জড়ায় দুই ন্যাটো মিত্র ফ্রান্স ও তুরস্ক। ওই ঘটনায় যুক্ত ছিল তুরস্কের আভরাসিয়া শিপিং কোম্পানির মালিকানাধীন পরিবহন জাহাজ সিরকিন। সোমবার ওই কোম্পানিটির সম্পদ বাজেয়াপ্ত করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। ইইউ’র অভিযোগ, ওই জাহাজ ব্যবহার করে লিবিয়ায় অস্ত্র পাচার করছিল কোম্পানিটি।

তবে অস্ত্র পাচারের অভিযোগ অস্বীকার করে আঙ্কারা বলছে, জাহাজটি মানবিক ত্রাণ পরিবহন করছিল। সোমবার রাতে তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, “ইইউ’র আইআরআইএনআই অপারেশন (লিবিয়ার যুদ্ধরত পক্ষগুলোর কাছে অস্ত্র পৌঁছানো ঠেকাতে ভূমধ্যসাগরে নিয়োজিত ইউরোপীয় মিশন) হাফতারকে পুরস্কৃত করছে আর জাতিসংঘ স্বীকৃত লিবিয়ার সরকারকে শাস্তি দিচ্ছে।’

লিবিয়ার আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সরকারকে সমর্থন দিয়ে আসছে আঙ্কারা। রাজধানী ত্রিপোলি থেকে কার্যক্রম পরিচালনা করছে গভর্নমেন্ট অব ন্যাশনাল অ্যাকর্ড (জিএনএ) নামের লিবিয়ার এই সরকারটি। আর অন্যদিকে লিবিয়ার পূর্বাঞ্চল এবং দক্ষিণাঞ্চলের বিস্তৃত এলাকা নিয়ন্ত্রণ করছে বিদ্রোহী সামরিক নেতা খলিফা হাফতারের স্বঘোষিত লিবিয়ান ন্যাশনাল আর্মি (এলএনএ)। হাফতার বাহিনীকে সমর্থন দিচ্ছে সংযুক্ত আরব আমিরাত, মিসর ও রাশিয়া।

তুর্কি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ওইসব দেশ এবং তাদের কোম্পানিগুলো আকাশ ও স্থলপথ ব্যবহার করে (নিরাপত্তা পরিষদের) সিদ্ধান্ত ভঙ্গ করে দখলকারী হাফতারের কাছে অস্ত্র পাঠাচ্ছে, যার শুরু করেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। এটা উপেক্ষা করে বৈধ সরকারকে সহায়তা পাঠানোকে নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন বলে বিবেচনা করা হচ্ছে। যা পরিষ্কারভাবে ইঙ্গিত দিচ্ছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন পক্ষপাতদুষ্ট।’

তুরস্কের কোম্পানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ ছাড়াও ইউরোপীয় ইউনিয়ন লিবিয়ার দুই নাগরিক ও আরও দুটি কোম্পানি কাজাখস্তানের সিগমা এয়ারলাইন্স এবং জর্ডানের মেড ওয়েভ শিপিং-এর বিরুদ্ধেও একই ব্যবস্থা নিয়েছে।

তুরস্কের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘পূর্ব ভূমধ্যসাগরে উত্তেজনা নিরসনে যখন উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে তখন এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া দুর্ভাগ্যজনক।’

পূর্ব ভূমধ্যসাগরে প্রাকৃতিক সম্পদ অনুসন্ধান নিয়ে গ্রিস ও সাইপ্রাসের সঙ্গে বিরোধের জেরে ইউরোপীয় ইউনিয়নের আরও নিষেধাজ্ঞার ঝুঁকির মুখে রয়েছে তুরস্ক। যদিও গত কয়েক দিনে আঙ্কারা ও গ্রিসের মধ্যকার উত্তেজনা কমে এসেছে।