কৃষক বিক্ষোভে অচল ভারতের বিভিন্ন রাজ্য

ভারতের পার্লামেন্টে বিতর্কিত কৃষি বিল পাসের বিরুদ্ধে তুমুল বিক্ষোভ অব্যাহত রেখেছেন কৃষকরা। পাঞ্জাব ও হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশসহ বিভিন্ন জায়গায় সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন তারা। সরকারকে হুঁশিয়ার করে কৃষকরা বলেছেন, অবিলম্বে সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না করলে আন্দোলন আরো জোরদার করা হবে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি সূত্রে জানা গেছে, এরইমধ্যে শ্রমিকদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেছে বিরোধী দল কংগ্রেস, আরজেডি, তৃণমূল এবং ১০টি কেন্দ্রীয় পর্যায়ের ট্রেড ইউনিয়ন।

সম্প্রতি ‘অত্যাবশ্যক পণ্য আইন’ সংশোধন, ‘কৃষি পণ্য লেনদেন ও বাণিজ্য উন্নয়ন’ এবং ‘কৃষিপণ্যের দাম নিশ্চিত করতে কৃষকদের সুরক্ষা ও ক্ষমতায়ন চুক্তি’ সংক্রান্ত তিনটি বিল  সম্প্রতি লোকসভায় পাস হয়। ২০ সেপ্টেম্বর এরমধ্যে ‘কৃষিপণ্য লেনদেন ও বাণিজ্য উন্নয়ন’ এবং ‘কৃষিপণ্যের দাম নিশ্চিত করতে কৃষকদের সুরক্ষা ও ক্ষমতায়ন চুক্তি’ সংক্রান্ত দু’টি বিল পাস হয় রাজ্যসভায়। 

বিলগুলো পাস না করতে আগে থেকেই বিক্ষোভ করছিলেন কৃষকরা। রাজ্যসভায় বিল পাসের পর সে বিক্ষোভ আরও জোরালো হয়ে ওঠে। পাঞ্জাব, হরিয়ানা এবং দিল্লির একাধিক জায়গায় পথে নেমে বিক্ষোভে সামিল হয়েছেন কৃষকরা। কোথাও পথ অবরোধ, কোথাও আবার রেল রোকো অভিযানে নেমেছেন তারা। রাষ্ট্রপতি বিলগুলোতে স্বাক্ষর করলেই তা আইনে পরিণত হয়ে যাবে। সেকারণে কৃষি বিল ফিরিয়ে দিতে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ-এর প্রতি আবেদন জানিয়েছেন বিরোধীরা। ওই বিলে রাষ্ট্রপতিকে সই না করতেও অনুরোধ জানিয়েছেন তারা।

কয়েকদিন ধরেই পাঞ্জাব, হরিয়ানা, দিল্লির একাধিক এলাকায় পথে নেমে প্ল্যাকার্ড হাতে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছেন কৃষকরা। শুক্রবারও ভারতীয় কিষাণ সংগঠন ও বাম সংগঠনের নেতৃত্বে পাঞ্জাবের জলন্ধরে পথে নেমে বিক্ষোভ শুরু করেন কৃষকরা। জলন্ধরের ফিল্লাউর এলাকায় অমৃতসর-দিল্লি জাতীয় সড়ক অবরোধ করা হয়। একইসঙ্গে অমৃতসরেও কেন্দ্র-বিরোধী বিক্ষোভে সামিল হয়েছিলেন কৃষকরা। সেখানে রেল রোকো অভিযানে নামেন তারা। রেললাইনে শুয়ে প্রতিবাদ জানাতে থাকেন বহু কৃষক। বিক্ষোভের জেরে ওই রুটে ট্রেন চলাচল সম্পূর্ণরূপে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। উত্তর প্রদেশেও অনেক জায়গায় কৃষকরা রাস্তা অবরোধ করেছেন। বারাবাঙ্কিতে সকাল থেকেই অবরোধ চলছে। অবরোধের ফলে লখনউ-অযোধ্যা সড়ক সহ বেশ কিছু জায়গায় প্রবল যানজট হয়েছে। বিক্ষোভ চলছে  কর্নাটক, বেঙ্গালুরু ও তামিল নাড়ু রাজ্যেও।

তুমুল বিক্ষোভের মধ্যেও ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কৃষি বিলকে ‘ঐতিহাসিক’ বলে উল্লেখ করেছেন। তার দাবি, বিরোধীরা নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের জন্য কৃষকদের ভুল বোঝাচ্ছে।