দ্বিরাষ্ট্রভিত্তিক সমাধান জোরালো করতেই ইসরায়েলের সঙ্গে চুক্তি: বাহরাইন

বাহরাইনের বাদশাহ বলেছেন, তার দেশের সঙ্গে ইসরায়েলের সম্পর্ক স্বাভাবিক করার চুক্তি স্বাক্ষর দুই রাষ্ট্রের ভিত্তিতে ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সংঘাত নিরসনের ক্ষেত্রে বৃহত্তর ভূমিকা রাখবে। জাতিসংঘের ৭৫তম সাধারণ অধিবেশনে ভিডিও লিংকের মাধ্যমে বৃহস্পতিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দেওয়া ভাষণে এই মন্তব্য করেন বাদশাহ হামাদ বিন ইসা আল খলিফা। তিনি বলেন, এই চুক্তির মধ্য দিয়ে পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের উদ্যোগ জোরালো হবে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।বাহরাইনের বাদশাহ হামাদ বিন ইসা আল খলিফা

মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতিতে একসময় দখলদার শক্তি হিসেবে বিবেচিত হওয়া ইসরায়েলের সঙ্গে সম্প্রতি আনুষ্ঠানিক চুক্তিতে উপনীত হয় দুই আরব দেশ। ১৫ সেপ্টেম্বর ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার এ চুক্তিতে উপনীত হয় সংযুক্ত আরব আমিরাত ও বাহরাইন। হোয়াইট হাউজে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উপস্থিতিতে এ চুক্তি সম্পাদিত হয়। এ চুক্তিকে 'নতুন মধ্যপ্রাচ্যের প্রভাত' হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন ট্রাম্প। তবে ফিলিস্তিনিরা মনে করেন এই চুক্তি তাদের পেছন থেকে ছুরিকাঘাত।

ইসরায়েলের সঙ্গে দুই আরব দেশের চুক্তি স্বাক্ষর নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়ার মুখে জাতিসংঘে দেওয়া ভাষণে নিজেদের অবস্থান ব্যাখ্যা করেন বাহরাইনের বাদশাহ হামাদ বিন ইসা আল খলিফা। ‘আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি এবং আরব শান্তি উদ্যোগের ভিত্তিতে পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠন করতে... দ্বিরাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সংঘাত অবসানের প্রক্রিয়া জোরালো করার আহ্বান জানান বাহরাইনের বাদশাহ।

বাদশাহ হামাদ বিন ইসা আল খলিফা আরও বলেন, ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা শান্তির জন্য একটি পরিশোধিত বার্তা। তিনি বলেন, ‘ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ঘোষণা একটি পরিশোধিত বার্তা। আর তা হলো আমাদের হাত এখন ন্যায্য এবং বিস্তৃত শান্তির জন্য প্রসারিত।’

বাদশাহ হামাদ বিন ইসা আল খলিফার ভাষণের একদিন আগেই প্রথমবারের মতো বাহরাইন সফর করেছে ইসরায়েলি কূটনীতিকদের একটি প্রতিনিধি দল। দুই দেশের চুক্তি স্বাক্ষরের পর এটাই কোনও প্রতিনিধি দলের প্রথম সফর।

সংযুক্ত আরব আমিরাত ও বাহরাইনের সঙ্গে ইসরায়েলের চুক্তি স্বাক্ষরের পর গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং দেশটিতে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত ডেভিড ফ্রায়েডম্যানসহ উভয় দেশের একাধিক কর্মকর্তা বলেছেন, পশ্চিম তীরে ইসরায়েলের বসতি সম্প্রসারণ পরিকল্পনা বাতিল নয় আপাতত স্থগিত করা হয়েছে।

মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি ও স্থিতিশীলতা অর্জনে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্যোগের প্রশংসাও করেন বাহরাইনের বাদশাহ। তিনি বলেন, দুই আরব দেশের সঙ্গে ইসরায়েলের চুক্তি স্বাক্ষরে মধ্যস্থতা করে যুক্তরাষ্ট্র যে ‘সভ্য বার্তা দিয়েছে... তা এই অঞ্চলের সব মানুষের ভবিষ্যতের সবচেয়ে ভালো নিশ্চয়তা।’

তবে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার সমালোচনা চলছে বাহরাইনের অভ্যন্তরেও। দেশটির বিভিন্ন নাগরিক গ্রুপ বলছে, কেবল ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পরই এ ধরনের সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করা উচিত।