আজারবাইজানে সেনা পাঠিয়েছে তুরস্ক: আর্মেনীয় রাষ্ট্রদূতের দাবি

রাশিয়ায় নিয়োজিত আর্মেনিয়ার রাষ্ট্রদূত দাবি করেছেন, উত্তরাঞ্চলীয় সিরিয়া থেকে আজারবাইজানে প্রায় ৪ হাজার যোদ্ধা পাঠিয়েছে তুরস্ক। বিবাদপূর্ণ নাগরনো-কারাবাখ এলাকায় আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের মধ্যে লড়াই চলার মধ্যেই সোমবার (২৮ সেপ্টেম্বর) এমন অভিযোগ করেন তিনি। রুশ বার্তা সংস্থা ইন্টারফ্যাক্সের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

1

রবিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বিতর্কিত নাগরনো-কারাবাখ অঞ্চল নিয়ে দুই বৈরী প্রতিবেশী দেশ আজারবাইজান ও আর্মেনিয়ার মধ্যে নতুন করে লড়াই শুরু হয়েছে। এই সংঘাতের জন্য একে অপরকে দায়ী করছে উভয় দেশ। সোমবার দ্বিতীয় দিনের মতো লড়াই অব্যাহত রয়েছে। এদিন রাশিয়ায় নিয়োজিত আর্মেনিয়ার রাষ্ট্রদূত অভিযোগ করেছেন, আজারবাইজানে তুরস্ক তাদের সেনা পাঠিয়েছে। তারা নাগোরনো-কারাবাখ অঞ্চলে আর্মেনিয়ার সেনাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অংশ নিয়েছে। উল্লেখ্য, তুরস্ক হলো আজারবাইজানের ঘনিষ্ঠ মিত্র।

১৮শ’ ও ১৯শ’ শতকে আজারবাইজান নামের দেশটি পর্যায়ক্রমে রুশ ও পারস্য দেশের শাসনাধীন ছিল। রুশ গৃহযুদ্ধের সময়ে ১৯১৮ সালের ২৮শে মে তৎকালীন আজারবাইজানের উত্তর অংশটি একটি ইসলামি প্রজাতন্ত্র হিসেবে স্বাধীনতা ঘোষণা করলেও মাত্র ২ বছরের মাথায় ১৯২০ সালে বলশেভিক বাহিনী এটি আক্রমণ করে আবার রুশ নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে এবং ১৯২২ সালে দেশটি সমাজতান্ত্রিক সোভিয়েত প্রজাতন্ত্রের অংশ হিসেবে সোভিয়েত ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত হয়। ১৯৩৬ সালে আজারবাইজান নামের সোভিয়েত প্রজাতন্ত্রটি ভেঙে তিনটি আলাদা প্রজাতন্ত্র আজারবাইজান, জর্জিয়া ও আর্মেনিয়ায় রূপান্তর করা হয়। মূলত তখন থেকেই আজারবাইজানের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম জনগোষ্ঠী এবং নাগরনো-কারাবাখ এলাকার খ্রিস্টান আর্মেনীয় জনগোষ্ঠীর মধ্যে দ্বন্দ্বের সূত্রপাত।

নাগোরনো-কারাবাখের জনগণ আর্মেনিয়ার সঙ্গে একত্রিত হতে চায়। ১৯৯১ সালের ২০শে অক্টোবর আজারবাইজান স্বাধীনতা লাভ করলে এই দ্বন্দ্ব সশস্ত্র সংঘাতে রূপ নেয়। চার বছরের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে প্রাণ হারায় প্রায় ৩০ হাজার মানুষ। ১৯৯৪ সালের মে মাসে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। নাগরনো-কারাবাখ আজারবাইজানের ভূখণ্ডের মধ্যে হলেও সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর অঞ্চলটির সংসদ আর্মেনিয়ার সঙ্গে থাকার পক্ষে ভোট দেয়। ১৯৯৪-এর যুদ্ধবিরতি চুক্তির পর থেকে এই এলাকা নিয়ন্ত্রণ করছে আর্মেনীয় বিদ্রোহী গোষ্ঠী। তবে যুদ্ধবিরতির পরও প্রায়ই দুই পক্ষকে সংঘাতে জড়াতে দেখা যায়। এরই অংশ হিসেবে সোমবার নতুন করে লড়াই শুরু হয়েছে।