পরিবার বাদ দিয়ে সেই নারীর শেষকৃত্য করলো পুলিশ

সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়ে নিহত ভারতের উত্তর প্রদেশের দলিত নারীর শেষকৃত্য গভীর রাতে সম্পন্ন করেছে পুলিশ। পরিবারের সদস্যদের বাইরে রেখে তাদের অনুমতি ছাড়াই তা সম্পন্ন করা হয়।  এই পদক্ষেপকে অমানবিক আখ্যা দিয়ে পুলিশের ব্যাখ্যা দাবি করেছেন অ্যাকটিভিস্টরা। উচ্চবর্ণের পুরুষদের আক্রমণের শিকার হওয়া ওই নারীর জন্য ন্যায়বিচারের দাবিতে সরব হয়ে উঠেছে ভারতের বহু মানুষ। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।noname

উত্তর প্রদেশের হাতরাস জেলায় গত ১৪ সেপ্টেম্বর ওই নারীর ওপর আক্রমণ চালানো হয়। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে পুলিশ জানিয়েছে, চার ব্যক্তি তাকে টেনে মাঠে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে মারাত্মক আহত অবস্থায় ফেলে রেখে চলে যায়। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, ওই নারীর মেরুদণ্ডসহ শরীরের একাধিক হাড় ভাঙা ছিল। এছাড়া কেটে ফেলা হয় তার জিহ্বা। মঙ্গলবার সকালে দিল্লির হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

সেদিন মধ্যরাতে উত্তর প্রদেশের নিজ গ্রামে নিয়ে যাওয়া হয় ওই নারীর মরদেহ। তার ভাই জানান, মরদেহ পৌঁছানোর পরই দ্রুত শেষকৃত্য করতে চাপ দেয় পুলিশ। তিনি বলেন, আমরা প্রত্যাখ্যা করলে তারা মরদেহটি অ্যাম্বুলেন্সে করে নিয়ে গিয়ে শেষকৃত্য সম্পন্ন করে।’ দূর থেকে শেষকৃত্য প্রত্যক্ষ করা স্থানীয় সাংবাদিক অভিষেক মাথুর জানান, পরিবারের সদস্য এবং সংবাদমাধ্যম বাইরে রেখেই শেষকৃত্য সম্পন্ন করা হয়।

তবে জেলা প্রশাসনের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা পুলিশের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে দাবি করেছেন পরিবারের সম্মতি নিয়ে শেষকৃত্য সম্পন্ন করা হয়। সাংবাদিক অভিষেক মাথুর জানান, নিহত নারীর মা মরদেহটি পোড়ানোর আগে মরদেহটি নিজ বাড়িতে নিয়ে যেতে চাইছিলেন। কিন্তু সেই অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করা হয়। তিনি বলেন, ‘বিক্ষোভরত জনতাকে ঠেকাতে পুলিশ মানববন্ধন গঠন করে পরিবারের সদস্য এবং সংবাদমাধ্যমের কর্মীদের শেষকৃত্য স্থলের কাছে ঘেষতে দেয়নি।’

নিহত নারীর ভাই বলেন, ‘পুলিশের কোনও কোনও সদস্য তাদের সঙ্গে নিষ্ঠুর আচরণও করে। তিনি বলেন, আমাদের অনুমতি ছাড়াই তারা মরদেহ নিয়ে যায় আর আমার বাবা-মায়ের অনুমতি ছাড়াই তার মরদেহের শেষকৃত্য সম্পন্ন করা হয়। এমনকি আমরা তাকে শেষ দেখা দেখতে পাইনি।’

মরদেহ দেখতে দেওয়ার দাবিতে তারা বিক্ষোভ শুরু করলে পুলিশ সদস্যরা তাদের মারপিঠ করে বলেও অভিযোগ করেন ওই নারীর ভাই। ওই সময়ে পরিবারের নারী সদস্যদেরও মারপিঠ করা হয় বলে জানান তিনি।