দেখা মিলছে বিরল চাঁদের

শনিবার (৩১ অক্টোবর) রাতে আবারও আকাশে দেখা মিলছে ব্লু  মুনের। একইসঙ্গে এদিন এশিয়ার বিভিন্ন দেশসহ পশ্চিমা বিশ্বে পালিত হচ্ছে হ্যালোইন উৎসব। ব্লু মুন নিজেই বিরল ঘটনা হলেও হ্যালোইন উৎসবের সঙ্গে মিলে তা জন্ম দিচ্ছে আরও বিরল ঘটনার। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গোটা বিশ্বে সর্বশেষ হ্যালোইন উৎসবের সময় ব্লু মুন দেখা যাওয়ার ঘটনা ১৯৪৪ সালের। এরপর বিশ্বের কিছু কিছু স্থানে এ দুই ঘটনা একসঙ্গে দেখা গেলেও গোটা বিশ্বে শনিবারই তা প্রথম দেখা যাবে।

1

বছরে ১২টি পূর্ণিমা হয়। প্রতি মাসে একটি করে। কোনও মাসে যদি দুবার ফুল মুন অর্থাৎ পূর্ণিমা পড়ে, তবে দ্বিতীয় বা শেষ পূর্ণিমাতে দেখা পাওয়া যায় ব্লু মুনের। অক্টোবর মাসের প্রথম দিন ছিল পূর্ণিমা। ৩১ অক্টোবর ফের পূর্ণিমা পড়েছে। তাই এই সুযোগ মিলতে চলেছে। এদিকে আবার প্রতিবছর ৩১ অক্টোবর এশিয়ার বিভিন্ন দেশসহ পশ্চিমের অধিকাংশ দেশেই ‘হ্যালোইন’ উৎসব পালিত হয়। বছরের এই দিনটি নিবেদন করা হয় মৃত, সাধু (হ্যালোজ), শহীদ এবং বিশ্বস্ত বিদেহী বিশ্বাসীদের স্মরণ করে। যে মূল ধারণা বা থিমকে কেন্দ্র করে হ্যালোইন উৎসব উদযাপন করা হয়, তা হলো—‘মৃত্যুকে হাস্যরসের মাধ্যমে উদযাপন করা’।

করোনাভাইরাস মহামারির কারণে আগের বছরগুলোর মতো এবার হ্যালোইন উৎসবের আমেজ ততটা জমজমাট থাকছে না। তবে এবার বাড়তি আনন্দ হিসেবে আকাশে দেখা দিচ্ছে ব্লু মুন। এমন দৃশ্য খুব কমই দেখা যায়। 

বিভিন্ন এলাকায় ১৯ বছর পর পর হ্যালোইন উৎসবে ব্লু মুন দেখা গেলেও সারা বিশ্বে এ ধরনের ঘটনা খুবই বিরল। যেসব এলাকার মানুষ ১৯ বছর পর পর পর এ ধরনের ঘটনার সাক্ষী হন, তাদেরকেও পরবর্তী হ্যালোইন ব্লু মুন দেখার জন্য অপেক্ষা করতে হবে ২০৩৯ সাল পর্যন্ত।

সাধারণত সৌর বর্ষপঞ্জিতে ১২টি পূর্ণ চান্দ্রমাস হয়ে থাকে। তবে সৌরমাসের তুলনায় চান্দ্রমাসের দৈর্ঘ্য কম। চান্দ্রমাস ২৯.৫ দিনে সম্পন্ন হয়। সাধারণ হিসাবে বলা যায়, চন্দ্রবছর সৌরবছরের তুলনায় গড়ে এগারো দিন কম হয়ে থাকে। এই অতিরিক্ত দিনগুলোর কারণে গড়ে প্রতি ২ দশমিক ৭ বছরে সৌরবর্ষপঞ্জিতে এক মাসে দু’টি পূর্ণিমা ঘটে। একইভাবে প্রতি ১৯ বছরে ৭ বার দেখা পাওয়া যায় ব্লু মুনের। 

প্রায় ৪০০ বছর ধরে চলে আসা ‘ব্লু ‍মুন’ ধারণাটির জন্য প্রথমে ভাবা হতো তা আসলেই নীল দেখায়। তবে আধুনিক জ্যোতির্বিজ্ঞানী জানিয়েছেন ‘ব্লু মুন’ প্রকৃতপক্ষে দেখতে মোটেও নীল নয়। তবে আকাশে ধুলোবালি বা ধোঁয়ার কারণে চাঁদকে কখনও কখনও সাময়িকভাবে নীলাভ মনে হতে পারে। এটি সময়ের ধারাবাহিকতায় সংঘটিত হওয়া একটি মহাজাগতিক ঘটনা ছাড়া আর কিছুই নয়।