যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসে প্রবল বৃষ্টির ফলে সৃষ্ট আকস্মিক বন্যায় অন্তত ৬৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে ২১ জনই শিশু। নিহতদের বেশিরভাগই মধ্য টেক্সাসের কার কাউন্টিতে। নিখোঁজ রয়েছে একটি গ্রীষ্মকালীন ক্যাম্পের ১১ কিশোরী ও তাদের এক পরামর্শদাতা। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
কার কাউন্টির শেরিফ ল্যারি লাইথা রবিবার সাংবাদিকদের জানান, এই অঞ্চলে মৃতের সংখ্যা ৫৯ জনে পৌঁছেছে। যার মধ্যে ২১ জন শিশু। বাকিদের মধ্যে আরও ১৮ জন প্রাপ্তবয়স্ক এবং ৪ শিশু শনাক্তের অপেক্ষায় রয়েছে।
শেরিফ লাইথা বলেন, এই দুর্যোগে সবাই শোকে স্তব্ধ। এটা কেবল একটি ট্র্যাজেডি নয়, এটা আমাদের সামগ্রিক নিরাপত্তার প্রশ্ন।
ট্রাভিস কাউন্টিতে মারা গেছেন আরও চারজন। সেখানে ১৩ জন নিখোঁজ। কেন্ডাল কাউন্টি ও বারনেট কাউন্টিতে একজন করে নিহত হয়েছেন। টম গ্রিন কাউন্টির সান অ্যাঞ্জেলো শহরে একটি ডুবে যাওয়া গাড়ি থেকে এক নারীর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
নিখোঁজ কিশোরীরা ‘ক্যাম্প মিস্টিক’ নামের একটি খ্রিষ্টান বালিকা ক্যাম্পে অংশ নিচ্ছিলো। ক্যাম্পে ওই সময় ৭০০ জন মেয়ে ছিল। ভয়াবহ বন্যার সময় ক্যাম্পটি গুয়াডালুপ নদীর কাছে অবস্থান করছিল। সেখানে হঠাৎ নদীর পানি ২৯ ফুট পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়।
টেক্সাসের গভর্নর গ্রেগ অ্যাবট জানান, তিনি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে ফেডারেল সহায়তার জন্য অনুরোধ করেছিলেন এবং হোয়াইট হাউজ সে অনুরোধে সাড়া দিয়েছে।
বন্যার পরই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দুর্যোগ ঘোষণা করেছেন। এর ফলে ফেডারেল সরকার ত্রাণ সহায়তা শুরু করেছে।
হোমল্যান্ড সিকিউরিটি সেক্রেটারি ক্রিস্টি নোম জানিয়েছেন, পূর্বাভাসে মাঝারি বন্যার সতর্কতা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেটি বাস্তব পরিস্থিতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল না। প্রশাসন পূর্বাভাস ব্যবস্থার উন্নয়নে কাজ করছে।
রবিবার দুপুর পর্যন্ত কার কাউন্টিতে আবারও ভারী বৃষ্টির শঙ্কা রয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ। পরিস্থিতি আরও অবনতি হতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এই বন্যা যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতা দিবসের ছুটির দিনেই আঘাত হানে। হঠাৎ এক ঘণ্টার মধ্যে ১৫ ইঞ্চি (৩৮ সেমি) বৃষ্টিপাত হয়। এর ফলে নদীর পানি দ্রুত বৃদ্ধি পায়। ৮৫০ জনের বেশি মানুষকে উদ্ধার করা হয়েছে। এদের অনেকে গাছের ডালে আশ্রয় নিয়েছিল।