টাইগ্রেতে চূড়ান্ত সেনা অভিযানের ঘোষণা ইথিওপিয়ার

স্বাধীনতাকামী অঞ্চল টাইগ্রেতে চূড়ান্ত ধাপের সেনা অভিযান শুরুর ঘোষণা দিয়েছেন ইথিওপিয়ার প্রধানমন্ত্রী আবি আহমেদ। আঞ্চলিক রাজধানী মেকেল্লেতে অভিযানের ঘোষণা তিনি বলেন, সেনাবাহিনী বেসামরিক নাগরিকদের ক্ষতি করার চেষ্টা করবে না। এছাড়া শহরটির নাগরিকদের নিজ বাড়িতে অবস্থানের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। স্বাধীনতাকামী যোদ্ধাদের আত্মসমর্পণ করতে বেঁধে দেওয়া তিন দিন সময় বুধবার শেষ হয়ে যাওয়ার পর বৃহস্পতিবার এই ঘোষণা দেন তিনি। তবে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী টাইগ্রে পিপলস লিবারেশন ফ্রন্ট পার্টি (টিপিএলএফ)। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।noname

বিগত দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে ইথিওপিয়ার সেনাবাহিনী ও স্বাধীনতাকামী টাইগ্রে পিপলস লিবারেশন ফ্রন্ট পার্টির (টিপিএলএফ) মধ্যে লড়াই চলছে। ইতোমধ্যে এই লড়াইয়ে এক হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এছাড়া অঞ্চলটি থেকে পালিয়ে প্রতিবেশী দেশ সুদানে শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নিয়েছে হাজার হাজার মানুষ। ওই অঞ্চলের এক সেনা ঘাঁটিতে হামলার জন্য প্রধানমন্ত্রী আবি আহমেদ টিপিএলএফ বাহিনীকে দায়ী করে তাদের বিরুদ্ধে অভিযানের নির্দেশ দিলে এই লড়াই শুরু হয়।

ইথিওপিয়ার সেনাবাহিনী টাইগ্রে অঞ্চলের কয়েকটি শহর দখলের দাবি করার পর গত রবিবার সন্ধ্যায় এক টুইট বার্তায় টিপিএলএফ যোদ্ধাদের আত্মসমর্পণ করতে তিন দিনের সময় বেঁধে দেন প্রধানমন্ত্রী আবি আহমেদ। গত কয়েক দিনে রাজধানী মেকেল্লের চারপাশে ইথিওপিয়ার বাহিনী বিপুল পরিমাণ ট্যাংক ও গোলাবারুদ মোতায়েন করছে বলে জানিয়ে তানিয়ে ইতোমধ্যে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ।

বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী আবি আহমেদ জানান, মেকেল্লেতে অভিযান শুরু করতে সেনাবাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। প্রায় পাঁচ লাখ মানুষের শহরটিতে টিপিএলএফ’র বিরুদ্ধে তৃতীয় ও চূড়ান্ত ধাপের অভিযান চালানো হবে বলে জানান তিনি। তার দাবি বেসামরিক নাগরিকদের ক্ষয়ক্ষতি সীমিত রাখতে সব উদ্যোগ নেওয়া হবে। ধর্মীয় এবং ঐতিহাসিক স্থাপনা, প্রতিষ্ঠান এবং আবাসিক এলাকা লক্ষ্যবস্তু করা হবে না বলেও জানান তিনি।

তবে স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠীর নেতা ডেবরেটসিয়ন গেবরেমাইকেলন জানিয়েছেন টাইগ্রে জনগণ আমাদের অঞ্চল শাসনের অধিকার রক্ষার প্রয়োজনে জীবন দিতে প্রস্তুত।টিপিএলএফ বাহিনী মূলত আধাসামরিক বাহিনীর একটি ইউনিটের সদস্য এবং প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত স্থানীয় যোদ্ধাদের সমন্বয়ে গঠিত। ধারণা করা হয়ে থাকে তাদের মোট সদস্য সংখ্যা প্রায় আড়াই লাখ। কোনও কোনও বিশ্লেষক মনে করেন ইথিওপিয়ার বাহিনীর হাতে মেকেল্লের পতন হলে ওই অঞ্চলের সংঘাত গেরিলা লড়াইয়ে মোড় নিতে পারে।

ত্রাণ সংস্থাগুলোর আশঙ্কা টাইগ্রে অঞ্চলের সংঘাত মানবিক সংকটে পরিণত হতে পারে। এছাড়া হর্ন অব আফ্রিকা অঞ্চলের স্থিতিশীলতা নষ্ট করতে পারে বলেও আশঙ্কা তাদের।