কৃষকদের সঙ্গে ভারত সরকারের আলোচনা ব্যর্থ

কৃষি আইনের মতপার্থক্য নিরসনে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার একটি কমিটি গঠনের প্রস্তাব আনলেও তা মানতে রাজি হয়নি আন্দোলনকারী কৃষকেরা। মঙ্গলবার বিকেলে দুই পক্ষের আলোচনা কোনও ধরনের সমঝোতা ছাড়াই শেষ হয়েছে। কৃষকদের দাবি অনুযায়ী আইন প্রত্যাহারে রাজি হয়নি ভারত সরকার। তবে সর্বনিম্ন মূল্য ও স্থানীয় কৃষি বাজার নিয়ে কৃষকদের উদ্বেগ নিরসনের চেষ্টা করা হবে বলে জানিয়েছে সরকার পক্ষ। অন্যদিকে দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে কৃষকেরা। ভারতীয় সম্প্রচারমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।noname

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সরকারের কৃষিনীতির বিরুদ্ধে আন্দোলনরত ভারতীয় কৃষকরা কার্যত দিল্লি ঘিরে ফেলেছে। পাঞ্জাব ও হরিয়ানা থেকে আরও কৃষক এই অবরোধে যোগ দিতে ইতোমধ্যে রওনা দিয়েছে। দিল্লি কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ার অবস্থায় রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার ভারত সরকারের তিন মন্ত্রী কৃষকদের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে আলোচনায় বসে। তবে সেই আলোচনায় কার্যত কোনও ফল আসেনি।

মঙ্গলবার বিকেল তিনটার পর কৃষকদের ৩৫ সদস্যের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে আলোচনায় বসেন ভারতের কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র ঠোমার, মন্ত্রিসভায় তার সহকর্মী পিযুষ গয়াল এবং জুনিয়র শিল্পমন্ত্রী সোম প্রকাশ। দিল্লির বিজ্ঞান ভবনে এই বৈঠক শুরু হয়।

বৈঠকের আগে কৃষকদের তরফে বলা হয়, সরকার কোনও পূর্বশর্ত ছাড়াই আলোচনায় আহ্বান করায় তারা বসতে রাজি হয়েছে। ভারতীয় কিষাণ ইউনিয়নের নেতা জগজিত সিং বলেন, আমাদের দাবি হলো নতুন প্রবর্তিত আইন বাতিল এবং সর্বনিম্ন মূল্য ইস্যুতে নতুন একটি আইন আনা। সরকার দাবি না মানলে আন্দোলন চলবে।

পূর্বনির্ধারিত আলোচনার তিন দিন আগেই কৃষকদের আলোচনায় বসতে সোমবার আহ্বান জানান কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র ঠোমার। করোনাভাইরাস ও ঠাণ্ডার কথা উল্লেখ করে কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র ঠোমার জানান গত দুই দিনে তিনি তিনবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করেছেন। কৃষকেরা দিল্লি অবরোধের ঘোষণার জেরে এসব সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে জানা গেছে।

গত কয়েক মাসে আন্দোলনরত কৃষকদের সঙ্গে তৃতীয় দফা আলোচনায় বসেছে ভারত সরকার। প্রথম দফর বৈঠকে ভারতের কৃষি সচিব নেতৃত্ব দিলেও পরের দফায় ছিলেন কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং ঠোমার ও পিযুষ গয়াল। ১৩ নভেম্বরের ওই বৈঠকে আগামী ৩ ডিসেম্বর ফের বৈঠকে বসার ঘোষণা দেওয়া হয়।

উল্লেখ্য, লোকসভার সর্বশেষ অধিবেশনে বিতর্কিত কৃষি বিল পাস করে বিজেপি শাসিত কেন্দ্রীয় সরকার। বিরোধীদের প্রবল আপত্তি সত্ত্বেও বিলটি ধ্বনি ভোটে পাস করানো হয়। তার পর থেকেই ভারতের সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কৃষিভিত্তিক দুই রাজ্য পাঞ্জাব এবং হরিয়ানায় কৃষক বিক্ষোভ শুরু হয়। শীতে কার্যত কোনো ফসল বোঝাই ট্রাক পাঞ্জাব থেকে বের হতে দিচ্ছেন না কৃষকরা। তাদের অভিযোগ, কেন্দ্রীয় সরকার নতুন আইন বলবৎ করে কৃষকদের স্বার্থে আঘাত করেছে। তবে সরকারের দাবি এতে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে না।