উপসাগরীয় সংকট নিরসনে নড়াচড়া চলছে: কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী

উপসাগরীয় চার দেশের সঙ্গে কাতারের কূটনৈতিক বিরোধ নিরসনের চেষ্টা হিসেবে ‘নড়াচড়া’ চলছে বলে জানিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন আবদুলরাহমান আল-থানি। শুক্রবার (৪ ডিসেম্বর) তিনি একথা জানান। তবে শিগগিরই কোনও সাফল্য আসছে কিনা তা নিয়ে কোনও আগাম ধারণা দেননি তিনি। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।কয়েক বছর ধরেই কাতারের ওপর অবরোধ আরোপ করে রেখেছে প্রতিবেশী চার দেশ

২০১৭ সালের জুন মাসে কাতারের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ও যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ করে দেয় সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন ও মিসর। সন্ত্রাসবাদে অর্থায়নের অভিযোগে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়। সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে দেওয়া হয় ১৩টি শর্ত। তবে প্রতিবেশী দেশগুলোর অভিযোগ বরাবর অস্বীকার করে শর্ত মানতে অস্বীকৃতি জানিয়ে আসছে কাতার। হোয়াইট হাউজ ছেড়ে যাওয়ার আগে বড় সাফল্য পেতে মধ্যপ্রাচ্য সংকট মেটানোর নতুন নীতি গ্রহণ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই উদ্যোগ বাস্তবায়ন করতে মধ্যপ্রাচ্যে রয়েছেন ট্রাম্পের উপদেষ্টা ও জামাতা জ্যারেড কুশনার।

এমন পরিস্থিতিতে শুক্রবার কাতারের ডেপুটি প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন আবদুলরাহমান আল-থানি বলেন, ‘এই মুহূর্তে একটি নড়াচড়া চলছে, তা থেকে আমরা আশা করছি এই সংকটের অবসান হবে।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের বিশ্বাস এই সংকটের অবসান আঞ্চলিক নিরাপত্তা এবং আমাদের জনগণের ভাগ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। পারস্পারিক শ্রদ্ধা এবং উপসাগরীয় অঞ্চলের সব মানুষের অধিকারের ভিত্তিতে এই সংকটের অবসান হওয়া উচিত।’

অবরোধ আরোপকারী চার দেশের দিকে ইঙ্গিত করে কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এই দেশগুলোর কোনওটিকেই আলাদা করে দেখে না দোহা। আমরা আশা করছি সবকিছু সঠিক পথেই এগুবে কিন্তু এখনও অনুমান করতে পারছি না এটা আসন্ন নাকি এক দিনেই নিরসন হয়ে যাবে।’

কাতারের ওপর আরোপ করা শর্তগুলোর অন্যতম ছিলো আল জাজিরা মিডিয়া নেটওয়ার্ক বন্ধ করে দেওয়া। তবে আল থানি বলেন, ‘কোনও দেশই এখন অন্যের কাছে কোনও কিছু দাবি করছে না। কিছু মতপার্থক্য রয়েছে সেগুলো অতিক্রম করতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘কোনও মতভেদ থাকলে তা নিরসনে অবশ্যই আলোচনা হবে। সার্বভৌমত্বের ওপর পারস্পারিক শ্রদ্ধাবোধের ভিত্তিতে আমাদের সম্পর্ক তৈরি করা প্রয়োজন।’

অনেকেই ধারণা করছেন অবরোধ আরোপকারী সবগুলো দেশ নয় বরং কয়েকটির সঙ্গে বিরোধ নিরসন হতে পারে। তবে কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সেই ধারণার প্রতি সমর্থন জানাননি। তিনি বলেন, ‘কাতার এবং চার দেশের মধ্যে মধ্যস্ততা করছে কুয়েত। যে কোনও প্রস্তাবই হতে হবে সামগ্রিক।’

সংকটের অবসান হলেও এর প্রভাব মুক্ত হতে সময় লাগবে জানিয়ে কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘চুক্তি হলে চার দেশের সঙ্গেই হবে, কেবল এক দেশের (সৌদি আরব) সঙ্গে নয়। আমরা সংকট সমাধান করতে সব মানুষের সম্পৃক্ততা এবং উপসাগরীয় ঐক্যের চেষ্টা করে যাচ্ছি।’