মিসরে ৩ মানবাধিকার কর্মীর মুক্তি

ব্যাপক আন্তর্জাতিক সমালোচনার মুখে মিসরের শীর্ষ একটি মানবাধিকার গ্রুপের তিন সদস্যকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। ইজিপশিয়ান ইনিশিয়েটিভ ফর পার্সোনাল রাইটস (ইআইপিআর) এর এসব সদস্যকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সংশ্লিষ্টতা ও ফেইক নিউজ ছড়ানোর অভিযোগে গত মাসে গ্রেফতার করা হয়। বৃহস্পতিবার এক টুইট বার্তায় গ্রুপটি জানিয়েছে তোরা কারাগার থেকে তাদের মুক্তি দেওয়া হয়েছে। তবে এখনও আটক রয়েছেন গত ফেব্রুয়ারিতে আটক হওয়া তাদের অপর এক সদস্য। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।মুক্তিপ্রাপ্তদের মধ্যে করিম এনরাহ`ও রয়েছেন

রাজনৈতিক, নাগরিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক বিভিন্ন ইস্যুতে স্বাধীনভাবে কাজ করে থাকে ইজিপশিয়ান ইনিশিয়েটিভ ফর পার্সোনাল রাইটস (ইআইপিআর)। গত মাসে এক বিবৃতিতে গ্রুপটির প্রধান গাসের আবদেল-রাজেকসহ তার দুই সহকর্মীকে আটকের কথা জানানো হয়। এই ঘটনাকে হাড় হিম করা বলে বর্ণনা করে জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থা। এই গ্রেফতারের নিন্দা জানানোতে বিভিন্ন দেশের রাজনীতিবিদদের পাশাপাশি যোগ দেন এমা থম্পসনব, স্টিফেন ফ্রাই ও স্কারলেট জোহানেসনের মতো সেলিব্রেটিরাও।

উল্লেখ্য, মিসরের প্রথম গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসির বিরুদ্ধে ২০১৩ সালে বিক্ষোভ জোরালো হয়ে ওঠে। সেই সুযোগে বর্তমান প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল সিসির নেতৃত্বে মুরসি সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতা দখল করে সেনাবাহিনী। তারপর দুই দফা নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আছেন তিনি। নিজেকে ২০৩০ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় রাখতে গত বছর সংবিধানও সংশোধন করেছেন তিনি। মানবাধিকার গ্রুপগুলোর অভিযোগ,সিসির আমলে ভিন্নমতালম্বীদের ওপর দমনপীড়ন জোরালো হয়েছে। কারাগারে ঢোকানো হয়েছে হাজার হাজার মানুষকে। এছাড়া বহু অ্যাকটিভিস্টকেও কারাগারে ঢোকানো হয়েছে। তবে বরাবরই মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে সিসির সরকার।

অ্যাকটিভিস্ট গ্রেফতারের ধারাবাহিকতায় ইআইপিআর’র সদস্যদের আটক করা হলেও সমালোচনার মুখে বৃহস্পতিবার তাদের মুক্তি দেওয়া হয়। এক টুইট বার্তায় মিসর সরকারের এই পদক্ষেপকে অস্বাভাবিক আখ্যা দিয়েছে ইআইপিআর। তবে এখনও আটক রয়েছে গ্রুপটির গবেষক প্যাট্রিক জাকি। গত ফেব্রুয়ারিতে আটক জাকির বিরুদ্ধে ফেইক নিউজ ছড়ানো, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অপব্যবহার এবং অনুমতি ছাড়া বিক্ষোভে উস্কানি দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে।

ইআইপিআর’র সদস্যদের ছেড়ে দেওয়ার আগে তাদের মুক্তির আহ্বান জানায় জাতিসংঘ। এছাড়াও তাদের গ্রেফতারের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বিবৃতি দেয় ফ্রান্স ও যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

অন্যদিকে হলিউড অভিনেত্রী স্কারলেট জোহানেসন গত ১ ডিসেম্বর ইআইপিআর’র ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশ করা একটি ভিডিও শেয়ার করে কায়রো কর্তৃপক্ষকে গ্রেফতারকৃতদের মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানান। ওই পোস্টে তিনি ‘মিসরীয়দের মর্যাদা রক্ষায় পাশে থাকার’ ঘোষণা দেন। এছাড়া ব্রিটিশ কমেডিয়ান স্টিফেন ফ্রাই ও অভিনেতা এমা থম্পসন, জোসেফ ফিয়েন্নেস এবং বিল নাই ওই গ্রেফতারের নিন্দা জানিয়ে তাদের সমর্থনে বার্তা শেয়ার করেন।