করোনার উৎস নির্ধারণে উহানে তদন্ত করবে ডব্লিউএইচও

করোনাভাইরাসের উৎস নির্ধারণে তদন্তকাজ পরিচালনা করবেন আন্তর্জাতিক পর্যায়ে স্বনামধন্য ১০ জন বিজ্ঞানী। এ লক্ষ্যে আগামী জানুয়ারিতে তারা চীনের উহান শহরে যাবেন। সেখানেই এ তদন্তকাজ চালানো হবে। বুধবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) এ তথ্য জানিয়েছে। বেইজিং-এর পক্ষ থেকেও এই উদ্যোগকে স্বাগত জানানো হয়েছে। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

সাধারণভাবে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসের উৎপত্তিস্থল হিসেবে চীনের উহান শহরকেই বিবেচনা করা হয়। মনে করা হয়, সেখানকার বন্যপ্রাণী বিক্রির একটি বাজার থেকে এ ভাইরাসের সূত্রপাত ঘটেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এ ভাইরাসকে চীনা ভাইরাস হিসেবেও অভিহিত করেছেন। এ ইস্যুতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমালোচনা নিয়ে অস্বস্তি রয়েছে বেইজিং-এর।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও অনেক দিন ধরেই চীনা কর্তৃপক্ষের কাছে এ তদন্তের অনুমতি চেয়ে এসেছে। তবে প্রথম দিকে অস্বীকৃতি জানিয়ে আসলেও শেষ পর্যন্ত ডব্লিউএইচও-এর সঙ্গে সমঝোতায় পৌঁছায় বেইজিং।

এরপরই আনুষ্ঠানিকভাবে করোনার উৎপত্তিস্থল নির্ধারণে তদন্তের ঘোষণা দেয় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। চার থেকে পাঁচ সপ্তাহ ধরে এই তদন্তের কাজ চলতে পারে বলে জানা গেছে।

বিষয়টি নিয়ে সংবাদমাধ্যম এপি-র সঙ্গে কথা বলেছেন আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের নিয়ে গঠিত তদন্ত দলের সদস্য জার্মানির রবার্ট কোচ ইনস্টিটিউটের ফ্যাবিয়ান লিন্ডার্টজ। তিনি জানান, করোনার উৎপত্তিস্থল নিয়ে কাওকে দোষারোপ করার অভিপ্রায় ডব্লিউএইচও-এর নেই। বরং প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত পর্যালোচনা করে ভবিষ্যতে করোনার সংক্রমণ মোকাবিলার ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে। ভবিষ্যৎ ঝুঁকির মাত্রা কমিয়ে আনাই এর লক্ষ্য।

সাধারণভাবে মনে করা হয়, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহান থেকে ছড়িয়ে পড়ে করোনাভাইরাস। এক পর্যায়ে চীনে ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাব কমলেও বিশ্বের অন্যান্য দেশে এর প্রকোপ বাড়তে শুরু করে। চীনের বাইরে করোনাভাইরাসের প্রকোপ ১৩ গুণ বৃদ্ধি পাওয়ার প্রেক্ষাপটে গত ১১ মার্চ দুনিয়াজুড়ে মহামারি ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। তবে আশার কথা হচ্ছে, এখন আক্রান্তের পর সুস্থ হওয়ার হার দ্রুত বাড়ছে। এরইমধ্যে করোনার টিকাও আবিষ্কৃত হয়েছে। তারপরও ভবিষ্যৎ ঝুঁকি মোকাবিলায় এ ভাইরাসের উৎসস্থল নির্ধারণ এবং প্রয়োজনীয় তথ্য উপাত্ত পর্যালোচনা করে ভবিষ্যত ঝুঁকি কমানোর বিষয়ে কাজ করবেন তদন্তদলের সদস্যরা।