সামরিক শাসন জারির প্রস্তাব নিয়ে হোয়াইট হাউসে ট্রাম্প সমর্থক?

হোয়াইট হাউসে যাওয়ার পথে ওয়াশিংটন পোস্টের একজন স্টাফ ফটোগ্রাফারের ছবিতে ধরা পড়েছেন একজন ট্রাম্প সমর্থক। ছবিতে মাইকেল লিন্ডেল নামের ওই ব্যবসায়ীর হাতে যে কাগজপত্র দেখা গেছে, তা সামরিক শাসন জারির প্রস্তাব কিনা- সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই আলোচনা উঠেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ সংবাদপত্রগুলো শনিবার ফলাও করে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। তবে সিএনএনের হোয়াইট হাউজ সংবাদাদতা জিম একোস্টা জানিয়েছেন, তিনি লিন্ডেলের সঙ্গে কথা বলেছেন। ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ ও কাগজপত্র জমা দিলেও তার নোটে 'মার্শাল ল' লেখা ছিল বলে যে দাবি করা হচ্ছে, তা অস্বীকার করেছেন লিন্ডেল।

মাইকেল লিন্ডেল যুক্তরাষ্ট্রের 'মাই পিলো‌' বলে একটি কোম্পানির প্রধান নির্বাহী। এটি মূলত বিছানা এবং বালিশ বিক্রির একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের একজন কট্টর সমর্থক তিনি। গত শুক্রবারও তার ফেসবুক পাতায় পোস্ট দিয়েছেন: "সবাই বিশ্বাস রাখুন! আমরা আরও চার বছর ডোনাল্ড ট্রাম্পকে আমাদের প্রেসিডেন্ট হিসেবে পাবো।"

শুক্রবার লিন্ডেল হোয়াইট হাউজে যান প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে। তিনি যখন ওয়েস্ট উইং এর দিকে যাচ্ছিলেন তখন তার ছবি ধরা পড়ে ওয়াশিংটন পোস্টের স্টাফ ফটোগ্রাফার জ্যাবিন বটসফোর্ডের ক্যামেরায়।

ছবিতে লিন্ডেলের হাতে ধরা কাগজপত্রে যেসব কথাবার্তা লেখা, তার পাঠ উদ্ধার করে অনেকে আঁতকে ওঠেন। টুইটারে অনেকে এমন মন্তব্য করেছেন যে, লিন্ডেলের হাত ধরা নোট পড়ে মনে হচ্ছে তিনি যেন যুক্তরাষ্ট্রে সামরিক শাসন জারির প্রস্তাব করতে যাচ্ছেন।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ক্ষমতা শেষ হয়ে যাচ্ছে ক’দিন পরেই, তার জায়গায় ২০ জানুয়ারি নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেবেন জো বাইডেন। ট্রাম্প এখনও দাবি করে যাচ্ছেন তিনিই নির্বাচনে জিতেছেন এবং কারচুপির মাধ্যমে জো বাইডেনকে জয়ী দেখানো হচ্ছে। গত ৬ জানুয়ারি তার ডাকে যে হাজার হাজার সমর্থক ওয়াশিংটন ডিসিতে এক সমাবেশে যোগ দিয়েছিলেন, সেখান থেকে ক্যাপিটল ভবনে সহিংস হামলার পর বিদায়ী প্রেসিডেন্ট এখন বেশ বেকায়দায় আছেন। এরইমধ্যে কংগ্রেস তাকে দ্বিতীয়বারের মতো অভিশংসন করেছে।

ও‍য়াশিংটন পোস্টের ফটোগ্রাফারের তোলা ছবিতে তার হাতে ধরা নোটের যেসব লেখা পড়া যাচ্ছে তার একটি হচ্ছে "মার্শাল ল ইফ নেসেসারি" (প্রয়োজনে সামরিক শাসন)। আরেক জায়গায় লেখা "মুভ ক্যাশ প্যাটেল টু সিআইএ একটিং" (ক্যাশ প্যাটেলকে সিআইএর ভারপ্রাপ্ত..)। এই ক্যাশ প্যাটেল হচ্ছেন ট্রাম্পের বিশ্বস্ত একজন কর্মকর্তা, যাকে নির্বাচনের পর প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে বদলি করা হয়। সেখানে তিনি জো বাইডেনের টিমের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের কাজে বাধা সৃষ্টি করছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছিল।

এর আগেও কোন কোন সমর্থক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নির্বাচনে পরাজিত হলে সেক্ষেত্রে সামরিক শাসন জারির পক্ষে মত দিয়েছিলেন। এদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছেন রজার স্টোন।