আন্দোলন বানচাল করতেই সহিংসতা, বলছেন ভারতের কৃষক নেতারা

ভারতের নতুন কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে দিল্লিতে বিক্ষোভকারী কৃষদের ওপর সহিংসতার ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছেন কৃষক নেতারা। তাদের দাবি, আন্দোলনকে নস্যাৎ করতেই শান্তিপূর্ণ মিছিলের ওপর তাণ্ডব চালানো হয়েছে। বিক্ষোভ অব্যাহত রাখারও ঘোষণা দিয়েছেন কৃষক নেতারা। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

মঙ্গলবার (২৬ জানুয়ারি) প্রজাতন্ত্র দিবসে দিল্লিতে আগে থেকেই ট্রাক্টর মিছিল করার কথা ছিল কৃষকদের৷ ষে অনুযায়ী মিছিল নিয়ে কৃষকেরা এদিন দিল্লি অভিমুখে রওনা দিলে তাদের ঠেকাতে মরিয়া হয়ে ওঠে পুলিশ। দফায় দফায় সংঘর্ষ, টিয়ার গ্যাস আর মোড়ে মোড়ে বসানো কাঁটাতারের ব্যারিকেড ভেঙে দিল্লির ঐতিহাসিক রেড ফোর্টে পৌঁছে যায় বিক্ষোভকারী।

ভেতরে প্রবেশের পর দূর্গের চূড়ায় উড়িয়ে দেওয়া হয় কৃষক আন্দোলনের পতাকা। এদিন এক আন্দোলনকারী কৃষকের মৃত্যুও হয়। সঙ্গীদের দাবি,  পুলিশের গুলিতে তিনি নিহত হয়েছেন। তবে পুলিশের দাবি, আইটিও মোড়ের কাছে একটি দ্রুতগামী ট্রাক্টর উল্টে গেলে ওই কৃষকের মৃত্যু হয়।

এক বিবৃতিতে সংযুক্ত কিসান মোর্চা দাবি করেছে, সহিংসতার পেছনে রয়েছে সমাজবিরোধীরা৷ কৃষকদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে কলুষিত করতেই এই ষড়যন্ত্র করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন কৃষক নেতারা৷ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে দেওয়া বিবৃতিতে তারা আরও বলেন, ‘যে অনাকাঙ্ক্ষিত ও অগ্রহণযোগ্য ঘটনা ঘটেছে তার জন্য নিন্দা জানাচ্ছি ও অনুশোচনা প্রকাশ করছি। যারা এ ধরনের কর্মকাণ্ড সংঘটিত করেছে তাদের থেকে নিজেদেরকে বিচ্ছিন্ন করছি।’

তবে কৃষক সংঘগুলো জানিয়ে দিয়েছে কোনোভাবেই তাদেরকে আন্দোলন থেকে বিচ্যুত করা যাবে না। তারা তাদের কর্মসূচি চালিয়ে যাবে।

পুলিশের এক বিবৃতিতে দাবি করো হয়েছে, সমাবেশের জন্য যেসব শর্ত দেওয়া হয়েছিল তা কৃষকরা লঙ্ঘন করে সহিংসতা ও ধ্বংসাত্মক পথ বেছে নেওয়ায় পুলিশ ব্যবস্থা নিয়েছে। তবে কৃষক সংঘের নেতা কাওয়ালপ্রিত সিং পান্নু পাল্টা অভিযোগ করেছেন, পুলিশই সহিংসতা উস্কে দিয়েছে। ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি-কে তিনি বলেন, ‘শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে হামলা হলে সরকারের জন্য সমস্যা নিশ্চিতভাবে বাড়বে। এখানেই সব শেষ হয়ে যাচ্ছে না। আমাদের আন্দোলন ও বার্তা আরও জোরালোই হবে।’

উল্লেখ্য, ভারতের নতুন প্রবর্তিত তিনটি কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে দিল্লি সীমান্তে গত দুই মাস ধরে অবস্থান নিয়ে আন্দোলন করে আসছে কৃষকেরা। দিল্লির প্রবল ঠান্ডার মাঝে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া কৃষকদের সঙ্গে ভারত সরকারের ১১ বার বৈঠক হলেও সেখানে আইন প্রত্যাহার নয়, স্থগিত রাখার প্রস্তাবই দেওয়া হয়েছে। তবে তা মেনে নিতে অস্বীকার করে আসা কৃষকেরা প্রজাতন্ত্র দিবসে ট্রাক্টর র‌্যালি কর্মসূচি ঘোষণা করে।