ইউরোপীয় ইউনিয়নকেই দুষছে অ্যাস্ট্রাজেনেকা

ভ্যাকসিন সরবরাহে ধীরগতি নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের অভিযোগের ব্যাপারে নিজেদের বক্তব্য উপস্থাপন করেছে অ্যাস্ট্রাজেনেকা। উদ্ভূত পরিস্থিতির জন্য ওই বহুজাতিক ওষুধ প্রস্তুতকারী কোম্পানি এখন ইউরোপীয় ইউনিয়নকেই দুষছে। তারা বলছে, ইইউ চুক্তি স্বাক্ষরে দেরি করায় এ সংকট তৈরি হয়েছে। আর তাদের চেয়ে তিন মাস আগে চুক্তি করার কারণে ভ্যাকসিন পাওয়ার ক্ষেত্রে এগিয়ে রয়েছে যুক্তরাজ্য। ইতালীয় সংবাদপত্র লা রিপাবলিকাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অ্যাস্টাজেনেকা প্রধান প্যাস্কেল সোরিয়ট এসব কথা বলেছেন।

সব সদস্য রাষ্ট্রের জন্যই ভ্যাকসিন কিনে রেখেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। তবে ভ্যাকসিন সরবরাহে ধীর গতির কারণে সম্প্রতি সমালোচনার মুখে পড়েছে তারা। সদস্যভুক্ত কয়েকটি দেশে ফাইজার-বায়োএনটেক টিকা সরবরাহে বিলম্ব ও কাটছাঁটের ঘোষণা দেওয়ার কারণে টিকাদান কর্মসূচি ধীরগতিতে চলছে। কয়েকটি দেশ আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার হুমকিও দিয়েছে। এর মধ্যেই গত সপ্তাহে ইইউকে অ্যাস্ট্রাজেনেকা জানায়, উৎপাদন প্রক্রিয়ায় কিছু জটিলতার কারণে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ডোজ সরবরাহ করা যাচ্ছে না। এরপর ওই ওষুধ কোম্পানিকে হুঁশিয়ারি দিয়ে ইইউ-এর স্বাস্থ্যবিষয়ক কমিশনার স্টেলা কিরিয়াকাইডস বলেন, নাগরিকদের সুরক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় যেকোনো পদক্ষেপ নেওয়া হবে। লা রিপাবলিকাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ নিয়ে পাল্টা প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন অ্যাস্ট্রাজেনেকা প্রধান।

সাক্ষাৎকারে সোরিয়ট স্বীকার করেছেন ইউরোপ, যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন অঞ্চলে ভ্যাকসিন সরবরাহের ক্ষেত্রে ‘সাময়িক সমস্যা’য় রয়েছেন তারা। উৎপাদনজনিত বিভিন্ন সমস্যা শনাক্ত ও সমাধান করার জন্য দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা কাজ করে যাচ্ছে সংশ্লিষ্টরা। তিনি মনে করেন, উৎপাদনের ক্ষেত্রে প্রত্যাশিত সময়সীমার চেয়ে দুই মাস পিছিয়ে আছেন তারা। 

তবে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশে ভ্যাকসিন সরবরাহে ধীরগতির জন্য অ্যাস্ট্রাজেনেকার সঙ্গে জোটটির চুক্তি করতে বিলম্ব হওয়াকেই দায়ী করেছেন সোরিয়ট। তিনি বলেন, ‘ইউরোপীয় ইউনিয়নের চুক্তি স্বাক্ষরের তিন মাস আগে আমাদের সঙ্গে চুক্তি করেছে যুক্তরাজ্য। সেকারণে আমরা যে সমস্যাগুলোর মুখোমুখি হচ্ছি তা যুক্তরাজ্যের ক্ষেত্রে সুরাহা করার জন্য তিন মাস বেশি সময় পেয়েছি। অপরদিকে সমস্যা চিহ্নিত করে সুরাহা করার ক্ষেত্রে তিন মাস পিছিয়ে আছে ইউরোপ।‘’

অ্যাস্ট্রাজেনেকা প্রধান আরও বলেন, ‘মার্চ নাগাদ যুক্তরাজ্য ২ কোটি ৮০ লাখ থেকে ৩ কোটি মানুষকে ভ্যাকসিন দিতে সক্ষম হতে পারে। ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি নাগাদ দেড় কোটি মানুষকে ভ্যাকসিন দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। এরইমধ্যে ৬৫ লাখ মানুষকে টিকা দেওয়ার কাজ শেষ হয়েছে। সুতরাং সে লক্ষ্য দেশটি সক্ষম হবে বলা যায়।’