নতুন বৈশিষ্ট্যের করোনা ছড়িয়েছে ৭০টি দেশে: ডব্লিউএইচও

যুক্তরাজ্য থেকে উদ্ভূত অধিক সংক্রমণ ক্ষমতাসম্পন্ন নতুন বৈশিষ্ট্যের করোনাভাইরাস এরইমধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। বুধবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)-এর হালনাগাদ তথ্যে বলা হয়েছে, সোমবার পর্যন্ত ৭০ দেশে এ ভাইরাসের বিস্তার ঘটেছে।

শুধু গত সপ্তাহেই ১০টিরও বেশি দেশে নতুন বৈশিষ্ট্যের ভাইরাসটি শনাক্ত করা হয়। এদিকে ফাইজার-বায়োএনটেক ও মডার্নার কোভিড টিকা নতুন বৈশিষ্ট্যের করোনার বিরুদ্ধেও কার্যকর বলে দাবি করা হয়েছে। বায়োগাইভ ডটকমে প্রকাশিত প্রকাশিত এক সমীক্ষা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফাইজার-বায়োএনটেক-এর টিকা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়া অধিক সংক্রমণ ক্ষমতাসম্পন্ন নতুন বৈশিষ্ট্যের করোনার বিরুদ্ধে সুরক্ষা দিতে সক্ষম। একটি ল্যাব টেস্টে অংশগ্রহণকারীদের রক্তের বিশ্লেষণের ভিত্তিতে উৎসাহব্যাঞ্জক এই ফলাফল পাওয়া গেছে।

এই সমীক্ষা প্রতিবেদনের ১১ জন গবেষকের মধ্যে দুইজন হলেন বায়োএনটেকের সহ-প্রতিষ্ঠাতা উগুর শাহিন এবং ওজলেম টুয়েরেসি। শাহিন প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী এবং তার স্ত্রী টুয়েরেসি চিফ মেডিক্যাল অফিসার।

অন্যদিকে নতুন বৈশিষ্ট্যের করোনার বিরুদ্ধে মডার্নার কোভিড টিকা কার্যকর বলে দাবি করেছেন প্রতিষ্ঠানটির বিজ্ঞানীরা। মডার্না ল্যাবের প্রাথমিক পরীক্ষায় দেখা গেছে, এই টিকা দেওয়ার পর শরীরের ভেতরে যে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার তৈরি হয়, সেটি নতুন ধরনটি শনাক্ত ও ঠেকাতে সক্ষম হয়েছে। তবে বিষয়টি পুরোপুরি নিশ্চিত হতে আরও গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, গত সেপ্টেম্বর মাসে যুক্তরাজ্যে শনাক্ত হওয়া ভাইরাসের ধরনটি অন্তত ৭০ শতাংশ বেশি হারে বিস্তার ঘটাতে পারে। বর্তমানে বিশ্বে যে টিকাগুলো রয়েছে সেগুলো করোনাভাইরাসের প্রথম দিকের ধরন ঠেকানোর চিন্তা করে তৈরি করা হয়েছে। তবে বিজ্ঞানীদের বিশ্বাস, এটি নতুন ধরন ঠেকাতেও কাজ করবে, যদিও তা নিয়ে তারা পুরোপুরি নিশ্চিত নন।

মডার্নার এই গবেষণায় বিজ্ঞানীরা এমন আটজনের রক্তের নমুনা নিয়েছেন যারা মডার্নার টিকার দুইটি ডোজই গ্রহণ করেছেন। তাদের গবেষণার ফলাফলের এখনও বিশেষজ্ঞ পর্যালোচনা হয়নি। তবে ধারণা করা হচ্ছে যে, টিকাটি করোনাভাইরাসের নতুন ধরনটি শনাক্ত করতে পারে। ভ্যাকসিনের কারণে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ব্যবহার করে তৈরি হওয়া অ্যান্টিবডি ভাইরাসটিকে শরীরের কোষে প্রবেশে বাধা তৈরি করে।

যে রক্তের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে, সেখানে ভাইরাসের নতুন ধরনটি ঠেকাতে যথেষ্ট অ্যান্টিবডির অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। তবে সেটি যুক্তরাজ্যে ভাইরাসের নতুন ধরন ঠেকাতে যতটা সক্ষম বলে দেখা গেছে, দক্ষিণ আফ্রিকায় পাওয়া ধরনটি ঠেকাতে ততটা সক্ষম নয়। এখন মডার্না গবেষণা করে দেখছে যে, তৃতীয় আরেকটি ডোজ দেয়া হলে তা উপকারী হয় কিনা। সেই সঙ্গে অন্যান্য বিজ্ঞানীদের মতো তারাও পরীক্ষা করে দেখছে যে, টিকাটি নতুন করে তৈরি করা হলে তা করোনার নতুন ধরন মোকাবিলায় আরও কার্যকরী হয়ে উঠতে পারে কিনা। সূত্র: বিবিসি।