মিয়ানমারে আরও জোরদার হচ্ছে বিক্ষোভ, দোকানপাট-কলকারখানা বন্ধ

মিয়ানমারে জান্তাবিরোধী বিক্ষোভ আরও জোরালো হচ্ছে। এদিকে সেনাশাসকদের ওপর চাপ সৃষ্টির লক্ষ্যে সোমবার ধর্মঘট ডেকেছে দেশটির গুরুত্বপূর্ণ ট্রেড ইউনিয়নগুলো। ধর্মঘটের ফলে বন্ধ রয়েছে বৃহত্তম শহর ইয়াঙ্গুনের দোকানপাট, কলকারখানা।

নির্মাণ, কৃষি ও পণ্য উৎপাদনসহ অন্তত নয়টি খাতের ট্রেড ইউনিয়ন সোমবারের ধর্মঘটে অংশ নিচ্ছে। তাদের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সেনাবাহিনী জনগণের ওপর দমনপীড়ন চালাচ্ছে। তাই গণতন্ত্রের জন্য পদক্ষেপ নেওয়ার সময় এসেছে। এই মুহূর্তে ব্যবসা ও অর্থনীতি সচল রাখার অর্থ হচ্ছে সেনাবাহিনীকে সহযোগিতা করা।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, সোমবারও দেশজুড়ে বিভিন্ন স্থানে গুলিবর্ষণ করেছে সেনারা। বিক্ষোভকারীদের জমায়েত ঠেকাতে জায়গায় জায়গায় গাড়ি থামিয়ে চেক করে সেনারা।

ইয়াঙ্গুন ছাড়াও মান্দালয় ও মনিওয়ার মতো শহরগুলোতেও সমবেত হয়েছে বিক্ষোভকারীরা। তাদের অনেকের হাতেই ছিল জাতীয় পতাকা।

দক্ষিণের উপকূলীয় শহর দাউইয়ের বিক্ষোভকারীদের নিরাপত্তা দেয় কারেন ন্যাশনাল ইউনিয়নের সদস্যরা। জাতিগত এই সশস্ত্র গোষ্ঠী বর্মি সামরিক বাহিনীর সঙ্গে দীর্ঘকাল ধরে যুদ্ধ চালিয়েছিল।

রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, আইন প্রয়োগের প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে হাসপাতাল ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে নিরাপত্তা বাহিনীর উপস্থিতি বজায় রাখা হয়েছে।

ফেব্রুয়ারির প্রথম দিন সেনাবাহিনী নির্বাচিত নেত্রী অং সান সু চিসহ বেসামরিক সরকারের শীর্ষ নেতাদের আটক এবং রাষ্ট্রক্ষমতা কুক্ষিগত করার পর থেকেই দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটিতে অচলাবস্থার সূচনা হয়। প্রাত্যহিক বিক্ষোভ ও অবরোধের কর্মসূচির কারণে ব্যবসায়িক পরিবেশ রুদ্ধ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অচল হয়ে গেছে দেশটির দৈনন্দিন প্রশাসনিক কার্যক্রম। জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, অভ্যুত্থানের পর থেকে মিয়ানমারে সামরিক জান্তা সরকারের হাতে অর্ধশতাধিক বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন। এরপরও বিক্ষোভকারীরা প্রতিদিনেই রাস্তায় নামছেন এবং গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সু চির মুক্তিসহ গণতান্ত্রিক সরকারের হাতে ক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানাচ্ছেন।

এদিকে মিয়ানমারে সহিংসতা এবং নিহতের সংখ্যা বাড়তে থাকায় উদ্বেগ জানিয়ে দেশটির সঙ্গে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা কর্মসূচি বাতিল করেছে অস্ট্রেলিয়া। একইসঙ্গে বেসামরিক মানুষের ওপর সহিংসতা চালানো থেকে বিরত থাকতে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ম্যারিজ পায়ান।