বাংলাদেশের ফয়সাল ‘কমনওয়েলথ ইয়াং পারসন অব দ্য ইয়ার’ নির্বাচিত

কমনওয়েলথ ‘ইয়াং পারসন অব দ্য ইয়ার’ নির্বাচিত হয়েছেন বাংলাদেশের তরুণ ফয়সাল ইসলাম। একইসঙ্গে তিনি জিতে নিয়েছেন এশিয়া অঞ্চলে কমনওয়েলথ ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ডও। বুধবার এ পুরস্কার ঘোষণা করেছে কমনওয়েলথ সচিবালয়। ৫৪ রাষ্ট্রের এই রাজনৈতিক জোটের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

ফয়সাল ইসলাম ‘সেফহুইল’ নামের একটি উদ্যোগের সঙ্গে জড়িত। তিনি এর সহপ্রতিষ্ঠাতা ও চিফ বিজনেস ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজার। এটি স্বল্প খরচে অ্যাম্বুলেন্স সেবাদানকারী একটি প্রতিষ্ঠান। কমনওয়েলথ সচিবালয় জানিয়েছে, ফয়সালের এ উদ্যোগ টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার তৃতীয় অভীষ্ট ‘সুস্বাস্থ্য ও ভালো থাকা’র  ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখছে।

কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে যে তরুণদের উদ্যোগ মানুষের জীবন বদলে দিতে ভূমিকা রাখছে এবং জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে সহযোগিতা করছে, তাদের কাজের স্বীকৃতি দিতেই এ পুরস্কার দেওয়া হয়ে থাকে।

কমনওয়েলথ বলছে, ‘সেফহুইল’নামের প্রতিষ্ঠানটির তিন চাকার ১০টি অ্যাম্বুলেন্স রয়েছে। তারা এ পর্যন্ত এক হাজার মানুষকে সেবা দিয়েছে। জরুরি প্রয়োজনে রোগী পরিবহনে স্বল্প খরচে এ সেবা নিতে পারেন গ্রামের মানুষ। অ্যাম্বুলেন্সসেবার পাশাপাশি সেফহুইল রোগীদের জরুরি প্রয়োজনে প্রশিক্ষিত কর্মী দিয়ে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবাও দিয়ে থাকে।

কমনওয়েলথের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কমনওয়েলথ ইয়াং পারসন অব দ্য ইয়ার এবং আঞ্চলিক পর্যায়ের কমনওয়েলথ ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ডের জন্য এ বছর প্রাথমিক তালিকায় ছিলেন কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোর এক হাজারের বেশি তরুণ। চূড়ান্ত বাছাইয়ে ১৮টি দেশের ২০ জনের মধ্যে শীর্ষে উঠে আসে ফয়সালের নাম।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, কমনওয়েলথ ইয়াং পারসন অব দ্য ইয়ার পুরস্কারের অর্থমূল্য পাঁচ হাজার পাউন্ড (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ছয় লাখ টাকা)। এ ছাড়া কমনওয়েলথ ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড পুরস্কারের জন্য ফয়সালসহ আঞ্চলিক পর্যায়ের পুরস্কার বিজয়ীরা পাবেন তিন হাজার পাউন্ড (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকা)।

অনলাইনে পুরস্কার ঘোষণা অনুষ্ঠানে নিজের উদ্যোগ সম্পর্কে বলতে গিয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রিয় বন্ধুকে হারানোর কথা স্মরণ করেন ফয়সাল। সময়মতো অ্যাম্বুলেন্স না পাওয়ায় বাঁচানো যায়নি তাকে। এরপর থেকেই বিষয়টি নিয়ে ভাবতে শুরু করেন ফয়সাল। সেই ভাবনা থেকেই সেফহুইলের যাত্রা শুরু।

পুরস্কারটি মা–বাবাকে উৎসর্গ করেছেন ফয়সাল ইসলাম। বলেছেন, ‘এ পুরস্কার পাওয়ায় আমি ভীষণ গর্বিত। এ স্বীকৃতি উদ্যোগটি এগিয়ে নিতে এবং আরও বেশি মানুষকে সেবা দিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।’