১৯৯১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে হিমায়িত অবস্থায় ওই বরফ মানবকে অস্ট্রিয়া ও ইতালির সীমান্তের মধ্যবর্তী ওটজাল পবর্তমালায় পাওয়া যায়। সে কারণেই তার নাম দেওয়া হয় ওটজি। তুষারের নিচে চাপা পড়ে প্রাকৃতিকভাবেই মমিতে পরিণত হওয়া এই ব্যক্তির মৃত্যুর সময় তার বয়স ৪০-৫০ বছর ছিল বলে ধারণা করা হয়ে থাকে।
বেশ কয়েক বছর ধরেই ওটজির পাকস্থলী পরীক্ষা করে আসছেন বিজ্ঞানীরা। এরইমধ্যে মৃত্যুর আগে সর্বশেষ ওটজি কী খেয়েছিলেন তাও শনাক্ত করতে সক্ষম হন তারা। আর এরপর শুরু হয় ওটজির অন্ত্র পরীক্ষা।
সম্প্রতি ওটজির অন্ত্র পরীক্ষা করতে গিয়ে হেলিকোব্যাক্টার পাইলোরি নামের এক ব্যাকটেরিয়ার অস্তিত্ব খুঁজে পান বিজ্ঞানীরা। আর এর মাধ্যমে অভিবাসনের ইতিহাস সম্পর্কে নির্দেশনা পাওয়ার আশাবাদ জানান তারা। অন্ত্র পরীক্ষার পর গবেষকদের ধারণা, ৫ হাজার ৩’শ বছরের আগ পর্যন্ত ইউরোপে আফ্রিকান হেলিকোব্যাক্টার পাইলোরির আগমন ঘটেনি।
তাদের মতে, ইউরোপীয়দের অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়াগুলো বংশানুক্রমিকভাবে উত্তর আফ্রিকার ব্যাকটেরিয়ার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হলেও এক্ষেত্রে তা হয়নি। এ ব্যাকটেরিয়ার প্রজাতিটি এশিয়ান প্রজাতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
১ লাখ বছরেরও বেশি সময় ধরে মানব দেহে অস্তিত্বের জানান দিয়ে আসছে হেলিকোব্যাক্টার পাইলোরি। পৃথিবীর ৫০ শতাংশ মানুষের পাকস্থলীতেই হেলিকোব্যাক্টারের অস্তিত্ব রয়েছে যা আলসার কিংবা গ্যাস্ট্রিকের জন্য দায়ী। বিজ্ঞানীদের মতে, ওটজির মৃত্যুর পর গত ৫ হাজার বছরে ইউরোপে অনেক অভিবাসীর আগমন ঘটেছে। আর তাই প্রাচীন ইউরোপীয়দের তুলনায় আধুনিক ইউরোপীয়দের দেহে অবস্থিত হেলিকোব্যাক্টার পাইলোরির জিনোমে কিছুটা পরিবর্তন হয়েছে। আধুনিক ইউরোপীয়দের অন্ত্রে যে হেলিকোব্যাক্টার পাইলোরির অস্তিত্ব পাওয়া যায় তা আফ্রিকান হেলিকোব্যাক্টারের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
গবেষকদের দাবি, ওটজির জীবিত থাকাকালীন সময় পর্যন্ত অন্তত ইউরোপে আফ্রিকান হেলিকোব্যাক্টার পাইলোরির আগমন ঘটেনি অর্থাৎ আফ্রিকান অভিবাসীর আগমন ঘটেনি।
/এফইউ/বিএ/