মহামারি আদৌ বিদায় নেবে?

সব মহামারি একসময় সেরে যায়। কিন্তু কোভিড কবে বিদায় নেবে এ প্রশ্নের উত্তর জটিল করে তুলেছে ওমিক্রন। বিশ্বকে এখন নতুন করে শিখতে হচ্ছে, কী করে একটি ভাইরাসের সঙ্গে ‘মিলেমিশে’ থাকতে হয়। তাই বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই মহামারি হয়তো কখনও পুরোপুরি বিদায় নেবে না।

করোনার অতি সংক্রামক ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের সুবাদে সংক্রমণ বাড়ছেই। একটি ক্লান্ত পৃথিবী আবারও কোভিডের নতুন একটি স্ট্রেইনের বিরুদ্ধে লড়াই করছে। কিন্তু এবারের লড়াইটা একেবারে গোড়া থেকে শুরু হচ্ছে না।

ভ্যাকসিন সব সময় সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে না পারলেও এটি গুরুতর অসুস্থতা থেকে জোরালো সুরক্ষা দেয়। ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টকেও কোভিডের আগের কিছু স্ট্রেইনের মতো ততটা মারাত্মক বলে মনে হচ্ছে না। যদিও সম্ভবত পরবর্তী মিউট্যান্টও হাজির হবে।

ইয়েল স্কুল অব পাবলিক হেলথের একজন সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ড. আলবার্ট কো। তিনি বলেন, যদি আমরা এন্ডগেমের বিষয়ে সত্যিই সিরিয়াস না হই তাহলে কী ঘটতে থাকবে সে সম্পর্কে নতুন ভ্যারিয়েন্ট একটি সতর্কতা। তার ভাষায়, ‘অবশ্যই কোভিড চিরদিন আমাদের সাথে থাকবে। আমরা কখনও এটি নির্মূল করতে পারবো না। তাই আমাদের লক্ষ্যগুলো চিহ্নিত করতে হবে।’

একটা সময় হয়তো বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা আনুষ্ঠানিকভাবে কোভিড মহামারি অবসানের ঘোষণা দেবে। দেশে দেশে সংক্রমণ কমে এলে, হাসপাতালে ভর্তি বা মৃত্যুর হার কমে এলে হয়তো এমন ঘোষণা আসবে। কিন্তু সেটি কখন হবে তা এখনও অজানা।

এমনকি এই ঘোষণা যখন আসবে তখনও দুনিয়ার কিছু অংশের মানুষকে কোভিডের বিরুদ্ধে লড়াই করত হবে। বিশেষত নিম্ন আয়ের দেশগুলোতে পর্যাপ্ত ভ্যাকসিন বা চিকিত্সার অভাব রয়েছে।

হার্ভার্ড টি.এইচ. চ্যান স্কুল অব পাবলিক হেলথের একজন সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ স্টিফেন কিসলার। তার মতে, আমরা এমন একটি ধাপে পৌঁছাবো যেখানে কোভিড মহামারি ফ্লু-র মতো এন্ডেমিক পর্যায়ে পৌঁছাবে।

করোনায় যুক্তরাষ্ট্রে দুই বছরে আট লাখেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। যেখানে ফ্লু-তে সাধারণত বছরে ১২ হাজার থেকে ৫২ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়।

কোভিডে ঠিক কতটা অসুস্থতা ও মৃত্যুর মুখোমুখি হবে বিশ্ব? এখন এটি মূলত একটি সামাজিক প্রশ্ন, বৈজ্ঞানিক নয়। জনস হপকিন্স সেন্টার ফর হেলথ সিকিউরিটির একজন সিনিয়র স্কলার ডা. আমেশ আদালজা। তিনি বলেন, ‘আমরা ফের ২০১৯ সালের দিকে যাচ্ছি না।’

যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষস্থানীয় সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ড. অ্যান্থনি ফাউসি ভাইরাসটিকে এমনভাবে নিয়ন্ত্রণের অপেক্ষা করছেন যেখানে এটি সমাজ বা অর্থনীতিকে ব্যাহত করবে না। ওমিক্রন মোকাবিলায় ভ্যাকসিনের বুস্টার ডোজ, মাস্ক পরা এবং আক্রান্তদের আইসোলেশনের ওপর জোর দিচ্ছে বাইডেন প্রশাসন। সূত্র: এপি।