মাংকিপক্স এখনও হেলথ ইমার্জেন্সি নয়: ডব্লিউএইচও

মাংকিপক্স এখনও পর্যন্ত ‘গ্লোবাল হেলথ ইমার্জেন্সি’ বা বিশ্বজুড়ে স্বাস্থ্য বিষয়ক জরুরি অবস্থা নয়। শনিবার এমন মত দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। রবিবার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম রয়টার্স।

ডব্লিউএইচও-এর মহাপরিচালক ড. টেড্রোস আধানম গ্রেব্রিয়াসিস অবশ্য বলেছেন, এই রোগের প্রাদুর্ভাবে তিনি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান বলেন, মাংকিপক্স স্পষ্টতই স্বাস্থ্যের জন্য একটি হুমকি হয়ে উঠেছে। আমি এবং আমার সহকর্মীরা এ নিয়ে উদ্বিগ্ন। ডব্লিউএইচও সচিবালয় থেকে এ ব্যাপারে কঠোর নজর রাখা হচ্ছে।

পৃথক বিবৃতিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, মাংকিপক্স নিয়ে নিজেদের মধ্যে দৃষ্টিভঙ্গির পার্থক্য থাকলেও তারা সর্বসম্মতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে, এটি এখনও পর্যন্ত গ্লোবাল হেলথ ইমার্জেন্সি নয়। এর আগে গত মাসেও ডব্লিউএইচও-এর তরফে বলা হয়েছিল, মাংকিপক্স আফ্রিকার বাইরে মহামারিতে রূপ নেবে না। ওই সময়ে সংস্থাটির একজন কর্মকর্তা জানিয়েছিলেন, উপসর্গ দৃশ্যমান নয় ইতোমধ্যেই সংক্রমিত এমন ব্যক্তিরা রোগটি ছড়াতে পারে কিনা সেটি এখনও স্পষ্ট নয়।

এই প্রাদুর্ভাব কী মহামারিতে পরিণত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে? এমন প্রশ্নের উত্তরে ডব্লিউএইচও-এর হেলথ ইমার্জেন্সি প্রোগ্রামের মাংকিপক্স বিষয়ক টেকনিক্যাল লিড রোজামুন্ড লুইস বলেছেন, ‘আমরা জানি না। কিন্তু আমরা এমনটি (মহামারির রূপ নেওয়া) মনে করছি না। এই মুহুর্তে আমরা বৈশ্বিক মহামারি নিয়ে উদ্বিগ্ন নই।’ মাংকিপক্সের বিরুদ্ধে গণটিকার প্রয়োজন নেই বলেও মনে করে ডব্লিউএইচও। তবে তারা এটির বিস্তার ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে উদ্যোগ জোরদারের আহ্বান জানিয়েছে।

নাম শুনে বানরের কথা মনে হলেও মাংকিপক্স ভাইরাসটির সঙ্গে সম্পর্ক মূলত ইঁদুরের। ভাইরাসটির প্রাকৃতিক আবাসভূমি পশ্চিম আফ্রিকা এবং রেইনফরেস্টে বাস করে এমন কেউ হয়তো আক্রান্ত ইঁদুরের সংক্রমণে এলে অসুখটি ছড়ায়। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মধ্য ও পশ্চিম আফ্রিকার দুর্গম অঞ্চলে হাজারো মানুষকে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হতে দেখা গেছে। তবে আফ্রিকার বাইরে ইউরোপ, আমেরিকায় কিছু দিন আগে পর্যন্তও এর প্রাদুর্ভাবের কথা শোনা যায়নি। এখন যাদের মাংকিপক্স হচ্ছে তারা কোথা থেকে সংক্রমিত হচ্ছে - তাও স্পষ্ট নয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, এই সংক্রমণ অস্বাভাবিক। কারণ এগুলো এমন দেশে ঘটছে যেগুলো এ ভাইরাসটির স্বাভাবিক আবাসস্থল নয়।

উল্লেখ্য, মাংকিপক্স এমন একটি ভাইরাসবাহিত রোগ যা সাধারণত মৃদু অসুস্থতা সৃষ্টি করে। অধিকাংশ আক্রান্ত ব্যক্তিই কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ভালো হয়ে যায়। এটি খুব সহজে একজন মানুষ থেকে আরেকজন মানুষের ছড়াতে পারে না। মনে করা হয় বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর মধ্যে এটি ছড়ানোর আশঙ্কা অপেক্ষাকৃত কম। এখনও পর্যন্ত এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কোনও টিকা নেই। তবে গুটিবসন্তের টিকা নিলে সেটি মাংকিপক্সের বিরুদ্ধেও ৮৫ শতাংশ সুরক্ষা দিয়ে থাকে। কারণ এই দুই ভাইরাসের অনেক মিল রয়েছে।