চীনের সহযোগিতা স্থগিতের সিদ্ধান্ত দায়িত্বজ্ঞানহীন: মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী

জলবায়ু পরিবর্তন, সামরিক আলোচনা ও আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলাসহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চীনের সহযোগিতা স্থগিতের সিদ্ধান্তকে দায়িত্বজ্ঞানহীন বলে আখ্যা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্তোনি ব্লিঙ্কেন। শনিবার ফিলিপাইনের রাজধানী ম্যানিলায় এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন। আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানানো হয়েছে।  

তিনি বলেন, ‘তাইওয়ানের প্রতি বেইজিংয় প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ নিয়েছে। মনে হচ্ছে চীন শান্তিপূর্ণ সমাধানকে অগ্রাধিকার দেওয়ার থেকে শক্তি প্রয়োগের দিকে বেশি নজর দিচ্ছে।’

শনিবার ব্লিঙ্কেনের এমন মন্তব্য এলো, যখন চীনা সামরিক বিমান এবং যুদ্ধজাহাজ তাইওয়ানে আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে।

ব্লিঙ্কেন বলেন, ‘চীনের সঙ্গে সহযোগিতা চুক্তির মধ্যে বেশ কয়েকটি সামরিক-থেকে-সামরিক চ্যানেল রয়েছে, যা ভুল যোগাযোগ এড়াতে এবং সংকট এড়াতে অত্যাবশ্যক।’

‘জলবায়ু সহযোগিতা স্থগিত করায় শুধু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ক্ষতিগ্রস্ত হবে তা নয়, এটি গোটা বিশ্বকে, বিশেষ করে উন্নয়নশীল বিশ্বকে শাস্তি দেবে। আমাদের দুই দেশের মধ্যে দ্বন্দ্বের কারণে বৈশ্বের অপরাপর দেশগুলোকে জিম্মি করা উচিত নয়,’ বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

তিনি বলেন,  ‘সম্প্রতি তাইওয়ানের চারপাশে চীনের বিপজ্জনক এবং অস্থিতিশীল কর্মকাণ্ডে যুক্তরাষ্ট্র উদ্বিগ্ন। ওয়াশিংটন পরিস্থিতি মোকাবিলায় অবিচল থাকবে।’

তবে যেকোনও ভুল রোধে যোগাযোগের চ্যানেলগুলি খোলা রাখতে যুক্তরাষ্ট্র বদ্ধপরিকর বলেও জানান ব্লিঙ্কেন।

জলবায়ু পরিবর্তন, সামরিক আলোচনা ও আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলাসহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সহযোগিতা স্থগিত করেছে চীন। সিনিয়র ডেমোক্র্যাট ন্যান্সি পেলোসির নেতৃত্বে যুক্তরাষ্ট্রের একটি কংগ্রেসশনাল প্রতিনিধি দল তাইওয়ান সফরের পর এই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে বেইজিং। এছাড়া ন্যান্সি পেলোসি ও তার পরিবারের উপর নিষেধাজ্ঞার ঘোষণাও দিয়েছে চীন। তারা বলছে, এই সফরের মধ্য দিয়ে তাইওয়ানে চীনের সার্বভৌমত্বকে চ্যালেঞ্জ জানানো হয়েছে। স্ব-শাসিত দ্বীপ তাইওয়ান নিজেকে মূল ভূখণ্ড থেকে আলাদা বলে মনে করে থাকে।

শুক্রবার চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সহযোগিতা স্থগিতের এই ঘোষণা দেয়। তারা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের প্রতিরক্ষা কর্মকর্তাদের মধ্যে আলোচনা বাতিল হবে, এছাড়া অবৈধ অভিবাসী ফেরানো, জলবায়ু পরিবর্তন এবং আন্তর্জাতিক অপরাধের তদন্তে সহযোগিতা বাতিল হয়ে যাবে।