আর এর মধ্য দিয়ে পাকিস্তান ভূখণ্ড থেকে সন্ত্রাসীদের মদদ দেওয়া হয় বলে ভারত এতোদিন যে অভিযোগ করে আসছে তা আরও জোরালো হয়ে উঠলো।
হেডলি জানান, আইএসআই কেবল লস্কর ই তৈয়বাকেই যে এরকম সহায়তা দিয়ে থাকে তা নয়, হিজবুল মুজাহিদীন, জয়েশ ই মোহাম্মদের মতো সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোও আইএসআই-এর সমর্থন পায়। আর এ জয়েশ ই মোহাম্মদ নামের সংগঠনটিই গত মাসে পাঠানকোটের বিমান ঘাঁটিতে হামলার দায় স্বীকার করেছে।
হেডলি জানান, লস্কর ই তৈয়বাসহ অন্য সন্ত্রাসী সংগঠনগুলো ইউনাইটেড জিহাদ কাউন্সিলের আওতায় একসঙ্গে কাজ করে থাকে।
এর আগে সোমবার হেডলি জানান, হামলার আগে দফায় দফায় পর্যবেক্ষণের সময় তিনি মুম্বাই এসে শহরের বিভিন্ন জায়গার ভিডিও চিত্র তুলে নিয়ে যান। তিনি তখন রিপোর্ট করতেন সাজিদ মির নামে এক জঙ্গিকে। তার মাধ্যমেই জঙ্গি গোষ্ঠীর বাকি সদস্যদের সঙ্গে হেডলির পরিচয় হয়। এই মিরের নির্দেশেই নিজের নাম বদল করেন তিনি। আগে তার নাম ছিল দাউদ গিলানি।
মুম্বাই হামলার মূল হোতা ছিলেন জাকিউর রহমান লাখভি। যোগসাজশ ছিল হাফিজ সাইদেরও। আর এদের সঙ্গে পাকিস্তানি গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই-এর টানা যোগাযোগ ছিল বলে আদালতে দাবি করেন হেডলি।
মুম্বাই হামলায় অভিযুক্ত হেডলি জানান, ২০০৬ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০০৮ সালের জুলাই পর্যন্ত তিনি ৮ বার ভারত সফর করেন। আর সে সময় একবারও ভারতীয় গোয়েন্দাদের সন্দেহের নজরে পড়েননি বলে জানান তিনি।
যে ভয়ঙ্কর জঙ্গি হামলা ১৬৬ জনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছিল সেই ২৬/১১-র আগে হেডলিরা মুম্বাইতে দু’বার হামলার চেষ্টা করেন। কিন্তু সেই ছক যেকোনওভাবে বানচাল হয়ে যায়। তৃতীয়বার তাদের সাফল্য কেড়ে নেয় ১৬৬ জনের প্রাণ।
২০০৯ সালে শিকাগো বিমানবন্দর থেকে হেডলিকে গ্রেফতার করে মার্কিন প্রশাসন। বিচার পর্বের শেষে ২০১৩ সালে মুম্বাই হামলাসহ বেশ কয়েকটি অভিযোগে হেডলিকে ৩৫ বছর কারাদণ্ডের আদেশ দেয় মার্কিন আদালত। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে কারাভোগ করছেন তিনি।
ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে তার এ সাক্ষ্য প্রদানের বিষয়ে সরকারি কৌঁসুলি জানান, ভারতের বিচার ব্যবস্থার ইতিহাসে এই প্রথম কোনও ‘বিদেশি জঙ্গি’ ভারতের আদালতে সাক্ষ্য দিলেন। সূত্র: এনডিটিভি, টাইমস অব ইন্ডিয়া
/এফইউ/