৩০ বছর পর যেভাবে দেখা হলো দুই বোনের

জ্যাকুয়েলিন ও লরেনা স্যানশেজ১৯৮৫ সালের ১৩ই নভেম্বর। বিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয় ভয়াবহ অগ্ন্যুৎপাত ও বরফ ধসের ঘটনায় তছনছ হয়ে পড়ে কলম্বিয়ার আরমেরো শহর। ওই ঘটনায় প্রাণ হারান অন্তত ২০ হাজার মানুষ। ঘটনার ভয়াবহতায় প্রাণ না হারালেও ওই সময় বিচ্ছিন্ন হয়ে যান জ্যাকুয়েলিন ও লরেনা স্যানশেজ নামের দুই বোন ।  
শৈশবে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া ওই দুই বোন ৩০ বছর ধরে বড় হয়েছেন আলাদা আলাদা পরিবারে। খুঁজে বেরিয়েছেন একে অপরকে। কিন্তু জানতে পারছিলেন না অপরজনের ভাগ্যে কী ঘটেছে! সে বেঁচে আছে নাকি মরে গেছে!
তবে সব অনিশ্চয়তার অবসান ঘটিয়ে সম্প্রতি দেখা হয়েছে এ দুই বোনের। কিন্তু কিভাবে? দুই বোনকে মিলিত করতে ভূমিকা রেখেছে ডিএনএ পরীক্ষা, সামাজিক মাধ্যমের প্রচারণা এবং আরমেরো ট্র্যাজেডির কারণে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় নির্মিত ফাউন্ডেশন আরমানডো আরমেরো।
আরমেরো ট্র্যাডেডিতে বেঁচে যাওয়া পরিবারের সদসদের তথ্য চেয়ে সামাজিক মাধ্যমে লরেনার দেওয়া একটি ভিডিও আবেদন দেখতে পান জ্যাকুয়েলিন। এরপর আরমান্ডো ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে তাদের ডিএনএ পরীক্ষা করা হয়। আর সে পরীক্ষায় দু বোনের ডিএনএতে মিল পান চিকিৎসকরা। ৩০ বছর পর মিলন হয় দুই বোনের।
বোনকে কাছে পেয়ে খুশিতে আত্মহারা লরেনা স্যানশেজ বলেন, ‘এটি একইসঙ্গে আনন্দের ও বেদনার। ঘটনা ঘটার পর আমার বোনকে খুঁজে পেতে ৩০ বছর পার হয়ে গেছে। আমরা এখন একে অপরের সঙ্গে ৩০ বছরে যা যা ঘটেছে তা আলাপ করে যাচ্ছি।’

দেখা হওয়ার পর জ্যাকুয়েলিন ও লরেনা

আর জ্যাকুয়েলিন বলেন, ‘আমি একইসঙ্গে উচ্ছ্বসিত এবং বিচলিত। আমি ভাবছিলাম, সে আমাকে ভালোবাসতে পারবে কিনা। এ মুহূর্তটি যে কেমন তা আসলে বলে বোঝানো মুশকিল।’ তবে ৩০ বছর পর দুই বোন একে অপরকে খুঁজে পেলেও তারা এখনও মা-বার সন্ধান পাননি।

১৯৮৫ সালে আরমেরো শহরে অগ্ন্যুৎপাতের পর বরফ শৃঙ্গগুলো গলতে শুরু করে এবং চারটি ভয়াবহ ভূমিধস হয়। আর তাতে চাপা পড়ে আরমেরো শহর। ২৯ হাজার বাসিন্দার মধ্যে ২০ হাজার জনই নিহত হন।  

১৯০২ সালে ক্যারিবিয়ান মাউন্ট পিলিতে অগ্ন্যুৎপাতের পর এটিই ওই শতকের সবচেয়ে ভয়াবহ ঘটনা। সূত্র: বিবিসি

/এফইউ/বিএ/