ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূতকে দাওয়াত দিয়ে জুতা খেলেন মিসরীয় এমপি!

মিসরীয় এমপি তৌফিক ওকাশামিসরের রাজধানী কায়রোয় নিযুক্ত ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত হেইম কোরেনকে নৈশভোজের দাওয়াত দেওয়ায় সংসদে জুতা দিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন তৌফিক ওকাশা নামের দেশটির এক এমপি। রবিবার সংসদ অধিবেশনে যোগ দিয়ে প্রতিবাদী সদস্যরা সংসদ থেকে ওকাশার বহিষ্কার দাবি করেন। এক সংসদ সদস্য বিতর্কিত এ সংসদ সদস্যের দিকে জুতা ছুঁড়ে মারেন।
এমপি ওকাশা একজন টেলিভিশন উপস্থাপক এবং একটি টেলিভিশন চ্যানেলের মালিক। বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের জন্য তিনি আগে থেকেই বিতর্কিত হিসেবে পরিচিত। গত বুধবার তিনি ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত হেইম কোরেনকে তার বাড়িতে দাওয়াত দেন এবং নৈশভোজের অনুষ্ঠান টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচারের ব্যবস্থা করেন।  
ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত তার দাওয়াতের কথা নিশ্চিত করে বলেছেন, তিনি এবং দূতাবাসকর্মীরা বুধবার সন্ধ্যায় ওকাশার বাড়িতে তিন ঘণ্টার নৈশভোজ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘ওকাশা আমাকে দাওয়াত দিয়ে পানি, কৃষি ও শিক্ষাখাতে সহযোগিতার জন্য প্রস্তাব দিয়েছেন এবং মিসরে কয়েকটি ইসরায়েলি প্রশিক্ষণ স্কুল খোলার আহ্বান জানিয়েছেন।’ ওকাশাকাকে নিজের বাসভবনে দাওয়াত দেবেন বলেও ইসরাইলি রাষ্ট্রদূত নিশ্চিত করেন। ওই অনুষ্ঠানে ওকাশা বলেছেন, ‘এজন্য আমাকে হয়তো হামলার শিকার হতে হবে এবং বিচারের মুখোমুখি হতে হবে।’
ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূতকে নৈশভোজ দাওয়াত দেয়ার ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন মিসরের বেশিরভাগ পার্লামেন্ট সদস্য এবং ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার বিরুদ্ধে শতাধিক সদস্যের স্বাক্ষরিত এক বিবৃতি দেওয়া হয়। বিবৃতিতে ওকাশার ওই দাওয়াত অনুষ্ঠানের বিষয়ে তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন তারা।

তবে ওকাশা দাবি করেন, ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূতকে দাওয়াত করে তিনি ভুল কিছু করেননি। কারণ ইসরায়েলের সঙ্গে মিসরের পূর্ণ কূটনৈতিক সম্পর্ক বিদ্যমান রয়েছে। এর আগে গত শনিবার তিনি তার চ্যানেলে বলেছিলেন, মিশরে ২২টি ইসরায়েলি কোম্পানি কার্যকর রয়েছে। কিন্তু মিসরে  ইসরায়েলি কোম্পানি কার্যকর থাকার কথা কখনও স্বীকার করেনি সে দেশের সরকার।

উল্লেখ্য, ১৯৭৯ সালে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে এক শান্তিচুক্তি অনুসারে, প্রথম আরব দেশ হিসেবে মিসর ইসরায়েলকে স্বীকৃতি প্রদান করে। তবে ইসরায়েলের সঙ্গে মিসরের আনুষ্ঠানিক সম্পর্ক  স্বাভাবিক নয়।

ইসরায়েলের একজন রাষ্ট্রদূত কায়রোতে অবস্থান করলেও মিসরীয় কর্মকর্তা এবং রাজনৈতিক নেতারা তার থেকে দূরত্ব বজায় রাখেন। বিভিন্ন সময়ে কায়রোর ইসরায়েলি দূতাবাস প্রতিবাদের লক্ষ্যবস্তু হিসেবে সামনে এসেছে। সূত্র: আলজাজিরা।

/এসএ/বিএ/