সংবাদমাধ্যমটি জানায়, তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চলীয় আনতালিয়া শহরের একটি মসজিদে ইমামতি করেন মুহসিন তুজার। একইসঙ্গে তুর্কি রক ব্যান্ড ফিরকের হয়ে গান করেন তিনি। সম্প্রতি, পর্তুগালের পোর্তো শহরের সেরালভেস মিউজিয়াম অব কনটেমপোরারি আর্ট থেকে তাকে কনসার্টে যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ জানানো হয়। সেখানে ‘কোরাসান টাইম-কোর্ট মিরেজ’ ব্যান্ড দলের সঙ্গে তার গান গাওয়ার কথা ছিল। এরপর তুরস্কের ধর্মবিষয়ক কর্তৃপক্ষ প্রেসিডেন্সি অব রিলিজিয়াস অ্যাফেয়ার্স বরাবর আবেদন জানান তুজার। তবে মঙ্গলবার সে আবেদনটি নাকচ হয়ে গেছে বলে জানায় প্রেসিডেন্সি।
‘রকিং ইমাম’ হিসেবে পরিচিত তুজারের দাবি, ‘খোদাই জানেন যে ওই কনসার্টে আমি অনৈসলামিক কোনও গান পরিবেশন করতাম না। আমি কেবল গানের মধ্য দিয়ে আমার দেশের ও ধর্মের প্রতিনিধিত্ব করতাম। যখন পশ্চিমাবিশ্বে ইসলামভীতি বা ইসলামোফোবিয়া ছড়িয়ে পড়েছে সে সময় এ ধরনের প্রতিনিধিত্ব জরুরি ছিল।’
উল্লেখ্য, কোরাসান টাইম-কোর্ট মিরেজ নামের ব্যান্ডটির প্রধান ক্যাথেরিন ক্রিস্টার হ্যানিক্স একজন সুইডিশ সঙ্গীতশিল্পী। ২০১৪ সালে তিনি ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তরিত হন।
ভারতীয় রাগা, আরবি-তুর্কি ঐতিহ্যবাহী সঙ্গীত এবং পূর্বাঞ্চলীয় আফ্রিকান গানের তুর্কি ও আরবি সুর মিশিয়ে ফিউশন তৈরি করে থাকে তারা।
তুজারের দাবি, আগে একসময় তুরস্কের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় থেকে পোর্তো কনসার্টকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হতো। সেই সঙ্গে ধর্মীয় কর্তৃপক্ষও তাদের সমর্থন দিতেন। তবে হঠাৎ করে সমর্থন বন্ধ করে দেওয়ায় ক্ষোভ জানিয়ে তুজার বলেন, কর্তৃপক্ষ তাদের অবস্থান না পাল্টালে তিনি আইনের আশ্রয় নেবেন।
২০১৩ সালে তুজারের ব্যান্ডের একটি অ্যালবাম প্রকাশ হওয়ার পর থেকে তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে ধর্মবিষয়ক কর্তৃপক্ষ। তবে এক বছর পর তাকে সাজা না দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। ওই তদন্ত চলাকালীনই ২০১৪ সালে নিউইয়র্কে কোরাসান ব্যান্ডের সঙ্গে গান করেন তুজার।
উল্লেখ্য, সরকারি নিয়ন্ত্রণাধীন প্রেসিডেন্সি অব রিলিজিয়াস অ্যাফেয়ার্স ধর্মনিরপেক্ষ তুরস্কের মসজিদ ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর দেখাশোনা করে থাকে। সাধারণত, ইসলামি বিষয়ে বাধাহীন দৃষ্টিভঙ্গি দেখিয়ে থাকেন তারা। সূত্র: আলজাজিরা
/এফইউ/