নিউ জিল্যান্ডের পতাকা বদলের চূড়ান্ত ভোট শুরু

নিউ জিল্যান্ডের জাতীয় পতাকা বদলের জন্য চূড়ান্ত ভোট শুরু হচ্ছে আজ (বৃহস্পতিবার)। তিন সপ্তাহ ধরে চলবে ভোটগ্রহণ কার্যক্রম। আর এর মধ্য দিয়ে চূড়ান্ত হবে দেশটির পতাকা।

এই গণভোটের মাধ্যমে নিউ জিল্যান্ডের সাধারণ জনগণ নির্ধারণ করবেন – তারা আগের পতাকাতেই থাকবেন, নাকি কালো ও নীলের জমিনে ‍রুপালি ফার্ন সম্বলিত নতুন পতাকা বেছে নেবেন।

আগামী তিন সপ্তাহে নিউ জিল্যান্ডের জনগণ নির্ধারণ করবেন দেশটির পতাকা

গত বছর পতাকা বদল নিয়ে অনুষ্ঠিত গণভোটে রুপালি ফার্ন আকা নকশার পতাকাটি পাঁচটি বিকল্প নকশার মধ্যে সেরা নির্বাচিত হয়। দুই পর্বে অনুষ্ঠিত ওই গণভোটে পাঁচটি বিকল্প নকশার মধ্যে প্রাথমিকভাবে দুটি পতাকার নকশা বাছাই করা হয় – কালো ও নীলের জমিনে ‍রুপালি ফার্ন এবং লাল ও নীলের জমিনে ‍রুপালি ফার্ন। তখন অবশ্য ভোটে এগিয়ে ছিল লাল ও নীলের জমিনে ‍রুপালি ফার্ন আঁকা নকশাটি। এরপর ওই দুটি নকশার পতাকার মধ্যে অনুষ্ঠিত হয় দ্বিতীয় পর্বের গণভোট। এতে কালো ও নীলের জমিনে ‍রুপালি ফার্ন আঁকা নকশাটি পায় ৫০ দশমিক ৫৮ শতাংশ ভোট।

চূড়ান্ত পর্বের ভোট সংগ্রহের সময়সীমা উল্লেখ করা হয়েছে ২৪ মার্চ পর্যন্ত। তবে এর আগেই সবাইকে ভোট দিতে অনুরোধ করা হয়েছে। ২৪ তারিখ স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ৮টার দিকে প্রাথমিক ফলাফল প্রকাশ করা হতে পারে। ভোটের চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করা হবে ৩০ মার্চ।

প্রথম দফার গণভোটে প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে ৪৮ ভাগ অংশ নিয়েছে। তবে এবারের ভোটে এই হার আরও বাড়বে বলে আশা করছে আয়োজকরা। পরিবর্তনের পক্ষে ভোট আসলে ১২ মাসের একটি অন্তর্বর্তীকালীন সময়ের ভেতর দিয়ে পতাকাটির বদল হতে পারে।

নিউ জিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জন কি

নিউ জিল্যান্ডের প্রধানন্ত্রী জন কি-র ন্যাশনাল পার্টি ২০১৪ সালে তৃতীয় মেয়াদে নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই তিনি পতাকা বদলের পক্ষে বিতর্ক করছেন। পতাকা বদলের পক্ষে তাদের যুক্তি, বর্তমান পতাকায় ইউনিয়ন জ্যাকের চিহ্ন রয়েছে, এছাড়া এটি দেখতে অনেকটা অস্ট্রেলিয়ার পতাকার মতো। জন কি পতাকা বদলের পক্ষে প্রচারণা জানিয়েছেন, নিজেদের সম্পূর্ণরূপে প্রকাশ করে, এমন একটি জাতীয় পতাকা চান তিনি।

সরকারের নিয়োগপ্রাপ্ত ফ্ল্যাগ কনসিডারেশন প্যানেলের চেয়ারম্যান অধ্যাপক জন বুরোস বলেছেন, ‘জানুয়ারির শেষের দিকে প্রশ্নটা এসে দাঁড়ালো, কোন পতাকাটি আমাদের মূল্যবোধ এবং বিশ্বাসকে সবচেয়ে সঠিকভাবে প্রকাশ করে, আর আমরা নিজেদের এখন কিভাবে দেখি এবং আগামীতে কিভাবে দেখতে চাই।’ তিনি আরও বলেন, নিউ জিল্যান্ডাররা বেশ কয়েক বছর ধরেই পতাকা বদলের কথা বলে আসছিলেন, আর এখন সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময়। পতাকা বদলে পক্ষে অথবা বিপক্ষে মতামত আসতে পারে। কিন্তু এই ফলাফলের প্রভাব থাকবে আরও বেশকিছু বছর ধরে।

গত ২২ জানুয়ারি অকল্যান্ড হারবার ব্রিজে বর্তমান পতাকার সাথে সম্ভাব্য নতুন পতাকাটিকেও উড়ানো হয়। যাতে দেশটির জনগণ গণভোটে নিজেদের সিদ্ধান্ত জানাতে পারেন। দুই দফার গণভোটে প্রায় ২৬ মিলিয়ন নিউ জিল্যান্ড ডলার খরচ হতে পারে বলে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান।  

/এসএ/