মিয়ানমারে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোটগ্রহণ চলছে

মিয়ানমারে শুরু হয়েছে দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। মঙ্গলবার সকাল থেকেই ভোটগ্রহণে অংশ নেন দেশটির এমপিরা। এর আগে সোমবার পার্লামেন্টের স্পিকার মান উইন খাইং থান নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোটাভুটির দিন ঘোষণা করেন।

প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনি দৌড়ে এগিয়ে আছেন অং সান সু চি’র দীর্ঘদিনের সহযোগী থিন কিয়াও। এছাড়াও প্রার্থী তালিকায় রয়েছে টিন মিয়ো উইন, টিন মার অংয়ের নাম।

দীর্ঘদিনের সামরিক শাসনের অবসানের প্রথম গণতান্ত্রিক সরকারের প্রেসিডেন্ট হতে যাচ্ছেন থিন কিয়াও। এমন ধারণা প্রায় স্পষ্ট। সেটা হলে তিনি হবেন ৫০ বছরেরও বেশি সময়ের মধ্যে দেশটির প্রথম বেসামরিক শাসক। নতুন প্রেসিডেন্ট আগামী ১ এপ্রিল দায়িত্ব গ্রহণ করবেন।

দীর্ঘদিনের সহযোগী থিন কিয়াও-এর সঙ্গে অং সান সু চি

মিয়ানমারের নিয়ম অনুযায়ী, পার্লামেন্টের উভয়কক্ষ থেকে একজন করে প্রার্থী প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচনের জন্য মনোনয়ন পাবেন। এছাড়া সেনাবাহিনী তাদের একজন প্রার্থীকে মনোনয়ন দেবে। যিনি সবচেয়ে বেশি ভোট পাবেন তিনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবেন। বাকি দুইজন ভাইস প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করবেন।

২০১৫ সালের ৮ নভেম্বর মিয়ানমারে ২৫ বছরের মধ্যে প্রথম অবাধ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে ৮০ শতাংশ আসনে জয় পায় অং সান সুচি’র দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি)।

পার্লামেন্টে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকলেও প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হতে সু চি’র আইনি বিধিনিষেধ রয়েছে। মিয়ানমারের সংবিধান অনুযায়ী, কোনও বিদেশিকে বিয়ে করলে বা সন্তানদের কেউ অন্য দেশের নাগরিক হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি দেশটির প্রেসিডেন্ট হতে পারবেন না। সু চি’র স্বামী মাইকেল অ্যারিস ছিলেন একজন ব্রিটিশ শিক্ষাবিদ।

তার দুই সন্তানও ব্রিটিশ নাগরিক। তবে সু চি’র দাবি, যাই হোক না কেন, তিনি ফলপ্রসূভাবে তার দেশের নেতৃত্ব দিতে সক্ষম।

এনএলডি’র মনোনীত প্রেসিডেন্ট প্রার্থী অক্সফোর্ড থেকে স্নাতক ডিগ্রিধারী ৭০ বছর বয়সী থিন কিয়াও দলীয়ভাবে সু চি’র আস্থাভাজন। ২০১০ সালে সু চি’কে যখন গৃহবন্দিত্ব থেকে মুক্তি দেওয়া হয় তখনও তার পাশে ছিলেন তিনি। আদেশ গ্রহণের সক্ষমতাকে তার অন্যতম যোগ্যতা বলে বিবেচনা করা হয়।

১৯৬২ সাল থেকে মিয়ানমারের ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণ করছে দেশটির সামরিক বাহিনী। এ সময়ের মধ্যে জান্তা সরকারের রোষানলে ১৫ বছর সু চি’কে গৃহবন্দী অবস্থায় কাটাতে হয়েছে। গত ২০ বছর ধরে মিয়ানমারে সু চি’র দলকে সরকারের প্রতিপক্ষ মনে করা হতো। এ সময়ে দলটির বহু নেতাকে কারাগারে পাঠানো হয়। সময়ের পরিবর্তনে পার্লামেন্টের বৃহত্তম দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে দলটি। তবে নির্বাচনে সু চি’র দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করলেও দেশটির পার্লামেন্টে সেনাবাহিনীর প্রভাব থাকছে। কারণ তাদের জন্য ১৬৬টি আসন সংরক্ষিত রয়েছে। কিছু গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বও থাকছে তাদের হাতে। সূত্র: বিবিসি।

/এমপি/