গত বছর রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে জাহাবার সাদিকসহ ওয়েবসাইটটির আরও দুই সম্পাদককে গ্রেফতার করা হয়েছিল। সংবাদ প্রতিষ্ঠানের ওপর সরকারের কড়াকড়ি আরোপের অংশ হিসেবে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে সংবাদ পোর্টালটি ব্লক করে দেওয়া হয়। এমন অবস্থায় ওয়েবসাইটি বন্ধ করে দেওয়ার ঘোষণা দেয় মালয়েশিয়ান ইনসাইডার কর্তৃপক্ষ।
কুয়ালালামপুর থেকে টেলিফোনে মালয়েশিয়ান ইনসাইডারের সম্পাদক জাহাবার সাদিক গার্ডিয়ানকে বলেন, বাণিজ্যিক কারণে পোর্টালটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বেশ কিছুদিন ধরে ওয়েবসাইটটিতে বিজ্ঞাপন না দেওয়ার জন্য বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত্ব কোম্পানিকে সরকারের পক্ষ থেকে চাপ দেওয়া হচ্ছিল বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
এক বিদায়ী নোটে জাহাবার সাদিক বলেন, ‘কাছের ও দূরের সব পাঠক যারা সরকারের পক্ষ থেকে ব্লক হওয়ার পরও আমাদের পড়েছেন তাদেরকে বিদায়। মালয়েশিয়ায় দ্য মালয়েশিয়ান ইনসাইডারের কার্যক্রম শেষ হচ্ছে। তবে বিশ্বে কিংবা মালয়েশিয়ায় কী ঘটছে তা নিয়ে আমি কখনও আমার কলম থামাব না, আমার ক্যামেরা নামাবো না, মুখ বন্ধ করব না কিংবা কানে কিছু গুঁজে রাখব না। আর একইরকম কাজ করার জন্য আমি আপনাদের সবার প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’
রাষ্ট্রীয় তহবিল ওয়ান মালয়েশিয়া ডেভেলপমেন্ট বেরহাদ (ওয়ান এমডিবি)নিয়ে দুর্নীতি এবং সে তহবিলের ৬৮১ মিলিয়ন ডলার নাজিবের অ্যাকাউন্টে স্থানান্তরের তদন্ত নিয়ে বেশ কয়েকটি প্রতিবেদন করে মালয়েশিয়ান ইনসাইডার। শুরু থেকেই দুর্নীতির অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন নাজিব। তার দাবি, ওই টাকা তিনি উপহার হিসেবে পেয়েছেন।
গত বছর, যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদ ব্লগ ‘দ্য সারাওয়াক রিপোর্ট’ ব্লক করে দেয় মালয়েশিয়া। এছাড়া এজ ওইকলি এবং এজ ফিনান্সিয়্যাল ডেইলি নামের দুটি অর্থনৈতিক সংবাদপত্রও সে সময় বন্ধ করে দেওয়া হয়।
মালয়েশিয়ার সরকারবিরোধীদের দাবি, ওয়ানএমডিবির কেলেঙ্কারি ঢাকতে নাজিব মিডিয়ার ওপর দমনমূলক ব্যবস্থা নিচ্ছেন। তবে মালয়েশীয় সরকারের দাবি, আগের যেকোনও সময়ের চেয়ে এখন মালয়েশিয়ার সংবাদমাধ্যম সবচেয়ে বেশি স্বাধীনতা ভোগ করছে।
কেবল দেশের ভেতরেই নয়, মালয়েশিয়ায় সংবাদমাধ্যমের ওপর দমনমূলক ব্যবস্থার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও তুমুল সমালোচনা চলছে। গত শনিবার দুর্নীতি নিয়ে নাজিব রাজাককে প্রশ্ন করার চেষ্টা করায় অস্ট্রেলীয় সংবাদমাধ্যম এবিসি’র দুই সাংবাদিককে আটকের ঘটনায় সে ক্ষোভ আরও জোরালো হয়ে ওঠে। মঙ্গলবার মালয়েশীয় পুলিশ জানায়, ওই দুই সাংবাদিককে অভিযুক্ত করা হচ্ছে না এবং তাদের দেশে ফেরত পাঠানো হবে। সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান
/এফইউ/