সমুদ্রের তলায় সহস্রাব্দের ‘প্রাচীন শহরের’ খোঁজ!

lost-city-2তামিলনাড়ুর মামাল্লাপুরমে সমুদ্র তীরের ৮০০ মিটার দূরবর্তী এবং সমুদ্রপৃষ্ঠের প্রায় ২৭ ফুট নিচে ১২ বর্গকিলোমিটার জুড়ে ছড়ানো-ছিটনো কিছু ধ্বংসস্তুপের হদিশ পেয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। জিওলজিস্ট, আর্কিওলজিস্ট, ডুবুরি, ঐতিহাসিক মিলিয়ে ১০ জনের একটি বিশেষজ্ঞ দল এই ধ্বংসস্তুপের ওপর গবেষণা চালাচ্ছেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি একটি প্রাচীন শহর ছিল।
২০০৪ সালে সুনামির ঠিক আগে অনেকটা পিছিয়ে গিয়েছিল সমুদ্ররেখা। সেই সময় মামাল্লাপুরম সমুদ্র তীরে উপস্থিত পর্যটকদের অনেকেই সমুদ্রের তলা থেকে জেগে ওঠা গ্রানাইট বোল্ডারের লম্বা দেওয়াল দেখতে পান। তারপরই বিশাল ঢেউ এসে ভাসিয়ে নিয়ে যায় সবকিছু। সুনামির কবল থেকে যারা বেঁচে ফিরেছিলেন, তাদের অনেকেই পরে সেই দেওয়ালের কথা জানিয়েছিলেন।
সেই দেওয়াল আসলে সমুদ্রের তলায় হারিয়ে যাওয়া এক প্রাচীন শহরের ধ্বংসাবশেষ বলে জানতে পেরেছেন বিশেষজ্ঞরা। ধ্বংসাবশেষের বেশিরভাগই সমুদ্রের তলার ঢেউ এবং শ্যাওলার পুরু আস্তরণে নষ্ট হয়ে গেলেও, যতোটা বোঝা যাচ্ছে, তাতে কয়েকটি বড় বাড়ি, ছয় স্তরবিশিষ্ট মন্দির ও একটি বন্দর এলাকা চিহ্নিত করতে পেরেছেন আর্কিওলজিস্টরা।
ভারতের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ওসেনোগ্রাফির প্রধান রাজীব নিগম জানিয়েছেন, ধ্বংসাবশেষগুলো অন্তত ১১শ’ থেকে ১৫শ’ বছরের পুরনো বলে অনুমান করা হচ্ছে। বেশ কিছু ইঁটের নির্মাণ সংগ্রাম সময়কালে (খ্রিস্টপূর্ব ৩০০ থেকে ২০০ খ্রিস্টাব্দ) নির্মিত। তা দেখেই ধ্বংসপ্রাপ্ত শহরটির বয়স বোঝার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
জিওফিজিক্যাল সার্ভে অনুযায়ী, গত ২ হাজার বছর ধরে প্রতি বছর গড়ে ১ থেকে ২ মিলিমিটার করে উঁচু হচ্ছে সমুদ্রপৃষ্ট। ৯৫২ সালে এক ভয়াল সুনামি আছড়ে পড়েছিল দক্ষিণ ভারতে। তার জেরেই এই ‘প্রাচীন শহর’ সমুদ্রের নিচে হারিয়ে যায় বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।  সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া, এই সময়।

/এসএ/বিএ/