যুক্তরাষ্ট্র ও চীন পরস্পরের ওপর থেকে পাল্টাপাল্টি শুল্ক উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস করতে সম্মত হয়েছে। এই পদক্ষেপ আগামী ৯০ দিনের জন্য কার্যকর থাকবে। জেনেভায় দুই দেশের শীর্ষ কর্মকর্তার বৈঠকের পর সোমবার (১২ মে) আনুষ্ঠানিকভাবে এই সিদ্ধান্ত জানানো হয়। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, চীনের ওপর আরোপিত শুল্ক ১৪৫ শতাংশ থেকে ৩০ শতাংশে নামিয়ে আনবে যুক্তরাষ্ট্র। অন্যদিকে, মার্কিন পণ্যের ওপর শুল্ক ১২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ করা হবে।
মার্কিন বাণিজ্যমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট বলেছেন, দুই দেশই নিজেদের জাতীয় স্বার্থ সমুন্নত রেখে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ভারসাম্যপূর্ণ বাণিজ্যে বিশ্বাস করে এবং এভাবেই আমরা অগ্রসর হতে চাই।
দুদেশই পরস্পরের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখতে আগ্রহী উল্লেখ করে বেসেন্ট বলেন, কোনও পক্ষই ‘ডি-কাপলিং’ চায় না। আমরা ব্যবসা করতে চাই। তবে উচ্চ শুল্ক আরোপে অবস্থা প্রায় অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার সমতুল্য হয়ে গিয়েছিল।
উল্লেখ্য, ডি-কাপলিং হচ্ছে পশ্চিমা কর্মকর্তাদের উচ্চারিত একটি নীতি। এর মাধ্যমে তারা বোঝায়, তাদের প্রধান প্রতিপক্ষ, বিশেষত চীনের ওপর নির্ভরশীলতা এমনভাবে কমিয়ে আনা. যেন তাদের সহায়তা ছাড়াও পশ্চিমা অর্থনীতির গতি বজায় থাকে।
নির্দিষ্ট কোনও খাতকে অগ্রাধিকার দিয়ে শুল্ক হ্রাস করা হয়নি বলে জানিয়েছেন মার্কিন অর্থমন্ত্রী। তিনি বলেন, ওষুধ, সেমিকন্ডাক্টর এবং ইস্পাত শিল্পের মতো যেসব খাতে সরবরাহ শৃঙ্খলে (সাপ্লাই চেইন) দুর্বলতা দেখা দিয়েছে, সেখানে কৌশলগত ভারসাম্য বজায় রাখা হবে।
ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে এটিই ছিল চীনা ও মার্কিন কর্মকর্তাদের প্রথম মুখোমুখি আলোচনা। ক্ষমতায় এসেই বিশ্বব্যাপী শুল্ক আরোপের ঝড় বইয়ে দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
চীনা পণ্যের ওপর দফায় দফায় শুল্ক বৃদ্ধি করতে করতে সেটা ১৪৫ এমনকি স্বল্প সময়ের জন্য দুইশ শতাংশও ছাড়িয়ে যান ট্রাম্প।
এর প্রতিক্রিয়ায় বেইজিংয়ের দিক থেকেও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়। যুক্তরাষ্ট্রের জন্য দরকারি দুর্লভ খনিজ রফতানি বন্ধ, মার্কিন পণ্যের ওপর শুল্ক বৃদ্ধি করে ১২৫ শতাংশে উন্নীত করে তারা বুঝিয়ে দেয়, চীনও ছেড়ে কথা কইবে না। তবে দুদেশের সমঝোতার মাধ্যমে সাময়িকভাবে বাণিজ্য যুদ্ধের অবসান হলো।
তাদের এই ঘোষণার পর, গত কয়েক সপ্তাহ ধরে অস্থিতিশীল আর্থিক বাজারে কিছুটা স্থিতিশীলটা আসতে শুরু করেছে।