যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসনবিরোধী বিক্ষোভ দমাতে রবিবার (৮ জুন) ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এ নিয়ে রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে রাজনৈতিক বিভক্তি আরও বৃদ্ধি পাবে বলে বিশ্লেষকদের আশঙ্কা। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্টকে ধুয়ে দিয়ে ডেমোক্র্যাট সিনেটর ক্রিস মারফি বলেছেন, সবার মনে রাখা উচিত, ট্রাম্প দেশের শান্তি বজায় রাখার জন্য কোনও কাজ করছেন না। তিনি কেবল পরিস্থিতি উত্তপ্ত করে বিভক্তি তৈরির চেষ্টা করছেন। তিনি গণতন্ত্র বা আন্দোলনে বিশ্বাস রাখেন না। সুযোগ পেলে তারা আইনের শাসন নিশ্চিহ্ন করে দিতেও পিছপা হবেন না।
ক্যালিফোর্নিয়া কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন নিয়ে ট্রাম্পের ওপর ক্ষুব্ধ ডেমোক্র্যাট সিনেটর কোরি বুকার। সংবাদমাধ্যমে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্পের দ্বিচারিতার জন্য কটাক্ষ করেন তিনি।
অনিবন্ধিত অভিবাসীদের বিরুদ্ধে তল্লাশি অভিযানের জেরে বিক্ষোভ–সংঘর্ষে উত্তাল হয়ে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের লস অ্যাঞ্জেলেস শহর। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গতকাল সেখানে দুই হাজার ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন করেন ট্রাম্প।
রবিবার ট্রাম্পের আদেশের পর লস অ্যাঞ্জেলেস ফেডারেল ভবনের সামনে অর্ধডজন সামরিক ধাঁচের বাহন পৌঁছাতে দেখা যায়। বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে গ্যাস নিক্ষেপ করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
বিক্ষোভ দমন নিয়ে ক্যালিফোর্নিয়া গভর্নর ও ট্রাম্পের মধ্যে কয়েক দফা তীক্ষ্ম বাক্যবিনিময় হয়ে গেছে। সরকারি পদক্ষেপকে বাড়াবাড়ি বলে মন্তব্য করেছেন গভর্নর গ্যাভিন নিউসোম। তার অভিযোগ, ট্রাম্প কেবল লোক-দেখানো কাজ করছেন। অন্যদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেছেন, শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হয়েছেন নিউসোম।
তবে নিজ রিপাবলিকান দল থেকে সমর্থন পাচ্ছেন ট্রাম্প। রিপাবলিকান হাউজ স্পিকার মাইক জনসন ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত সমর্থন করে বলেছেন, ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন নিয়ে কোনও সমস্যা দেখছি না। আমার মনে হয় না, এখানে মশা মারতে কামান দাগা হচ্ছে। আমাদের অন্যতম মূলনীতি হলো, শান্তি রক্ষায় প্রয়োজনে শক্তি প্রয়োগ। পররাষ্ট্র ও অভ্যন্তরীণ উভয় ক্ষেত্রেই আমরা এই নীতিতে চলি।
রিপাবলিকান সিনেটর জেমস ল্যাঙ্কফোর্ড বলেছেন, অনেক স্থানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর ঢিল ছুড়ছেন বিক্ষোভকারীরা। (ট্রাম্প অযথা গায়ের জোর প্রদর্শন করছেন না) মার্কিন প্রেসিডেন্ট কেবল পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছেন।
যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসনবিরোধী অভিযান, নাগরিকদের প্রতিবাদের অধিকার এবং দেশীয় বিষয়ে সরকারের শক্তি ব্যবহারের সীমা নিয়ে চলমান বিতর্কের মধ্যে এই ঘটনাটি নতুন মাত্রা যোগ করেছে।