মার্কিন হামলার পর ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করলো ইরান

মার্কিন হামলার পর ইসরায়েলের দিকে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে ইরান। ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম হারেৎজ জানিয়েছে, ইরানের দিক থেকে একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষিপ্ত হওয়ার সংকেত শনাক্ত করেছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।

ফরাসি বার্তাসংস্থা এএফপি জানিয়েছে, ইসরায়েল ব্যাপী সতর্ক সংকেত জারি হয়েছে এবং তেল আবিবসহ দেশের একাধিক স্থানে বিস্ফোরণের আওয়াজ পাওয়া গেছে।

এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ইসরায়েলের দিকে কোনও ক্ষয়ক্ষতির তথ্য পাওয়া যায়নি।

ইরানের দিক থেকে ৩০টি ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়া হয়েছে বলে এএফপির প্রতিবেদনে জানানো হয়। ক্ষেপণাস্ত্রগুলো শনাক্ত করে তা ধ্বংস করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।

শনিবার ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনা নাতানজ, ইসফাহান এবং ফোর্দোতে হামলার কথা জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। নিজেই ইরানকে দু সপ্তাহ সময় বেঁধে দেওয়ার দু-দিন পরই হামলা করে বসেন তিনি।

ওভাল অফিস থেকে সম্প্রচারিত তিন মিনিটের এক ভাষণে তিনি বলেন, হামলাটি ছিল অসাধারণ সামরিক সাফল্য। তেহরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের প্রধান অবকাঠামো পুরো ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে।

ইরানের সামনে শান্তি অথবা ট্র্যাজেডির পথ খোলা রয়েছে বলে সতর্ক করে ট্রাম্প জানান, হামলা করার জন্য আরও লক্ষ্যবস্তু রয়েছে। শিগগিরই শান্তি না এলে আমরা ক্ষিপ্রতা, দক্ষতা এবং নৈপুণ্যের সঙ্গে সেখানে হামলা চালাবো।

এদিকে, মার্কিন হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকি বলেছেন, ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় মার্কিন হামলার পর আত্মরক্ষার সব রকম বিকল্প ব্যবহারের অধিকার তাদের রয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের হামলাকে অত্যন্ত গর্হিত কাজ উল্লেখ করে আরাকি প্রচ্ছন্ন হুমকির সুরে জানান, এই পদক্ষেপের চিরস্থায়ী ফল ভোগ করতে হবে।

ইরানি বার্তাসংস্থা তাসনিমকে দেশটির এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, শত্রুপক্ষের হামলায় ফোর্দোর একটি অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে ক্ষতির ব্যাপ্তি সম্পর্কে ইরানের পক্ষ থেকে স্পষ্ট কিছু জানানো হয়নি।

হামলার জন্য ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। ট্রাম্পের পদক্ষেপকে সাহসী সিদ্ধান্ত উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক রাষ্ট্রকে সবচেয়ে শক্তিশালী অস্ত্র তৈরি থেকে বিরত রাখতে পদক্ষেপ নিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। ইতিহাসের পাতায় এটি লেখা থাকবে।

গত ১৩ জুন ইরানের পারমাণবিক স্থাপনা ও সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে ইসরায়েলি হামলা থেকে চলমান সংকটের সূচনা। তেল আবিবের দাবি, ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন থেকে বিরত রাখতে এই অভিযান চলছে। অপরদিকে, বরাবরের মতো পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির কথা অস্বীকার করে এসেছে ইরান।

ইরানি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাতে দেশটির সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, চলমান হামলায় অন্তত ৪৩০ জন মানুষ নিহত এবং সাড়ে তিন হাজারের বেশি আহত হয়েছে। অন্যদিকে, ইরানের পাল্টা হামলায় ইসরায়েলের অন্তত ২৪ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে নেতানিয়াহুর কার্যালয়।