পারমাণবিক অস্ত্র বহনে সক্ষম যুদ্ধবিমান কিনবে ব্রিটেন

পারমাণবিক অস্ত্র বহনে সক্ষম এক ডজন যুদ্ধবিমান কিনবে যুক্তরাজ্য। মঙ্গলবার (২৪ জুন) প্রকাশিত বিবৃতিতে ব্রিটিশ সরকার বলেছে, এর মধ্য দিয়ে তাদের পারমাণবিক নিবৃত্তকরণের (নিউক্লিয়ার ডেটারেন্স) আওতা বৃদ্ধির সর্বোচ্চ পদক্ষেপ নেওয়া হলো। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, লকহেড মার্টিন নির্মিত এফ থার্টি ফাইভ এ বিমানগুলো ট্যাকটিক্যাল উইপন (কৌশলগত অস্ত্র) বহনে সক্ষম। এই বিমানগুলো তাদের বহরে যুক্ত হলে স্নায়ুযুদ্ধের পর প্রথমবারের মতো ট্যাকটিক্যাল নিউক বহন সক্ষমতা অর্জন করবে যুক্তরাজ্য।

দেশটির প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার বলেছেন, চরম অস্থিতিশীল এই যুগে আমরা শান্তিপূর্ণ অবস্থার স্থায়িত্ব নিয়ে নিশ্চিন্ত হয়ে বসে থাকতে পারি না। সে জন্যই আমাদের সরকার জাতীয় নিরাপত্তায় ব্যয় বৃদ্ধি করছে।

রাশিয়ার ক্রমবর্ধমান আগ্রাসন এবং ইউরোপীয় নিরাপত্তায় যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা সংকোচনের প্রেক্ষাপটে যুক্তরাজ্য তার প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় বৃদ্ধি করছে। এর অংশ হিসেবে সাবমেরিন বহর আধুনিকায়নও চলমান।

সরকার জানায়, পারমাণবিক অস্ত্রে সজ্জিত বিমান ন্যাটোতে যোগ করতে পারবে, যা সংঘাতের সময় ব্যবহৃত হতে পারে।

১৯৯৮ সালে ডব্লিউ ই ওয়ান ওয়ান সেভেন ফ্রি ফল বোমা প্রত্যাহার করার পর যুক্তরাজ্য আর যুদ্ধবিমানে পারমাণবিক অস্ত্র বহনের সক্ষমতা রাখেনি। এখন এই জেটগুলোর মাধ্যমে তারা আবার সেই ক্ষমতা ফিরে পাচ্ছে।

নতুন যুদ্ধবিমানগুলো মার্কিন ট্যাকটিক্যাল নিউক বি সিক্সটি ওয়ান বহনে সক্ষম। তবে এগুলো ব্যবহার করতে হলে যুক্তরাষ্ট্র থেকেই ব্রিটেনকে অস্ত্র নিতে হবে বলে জানিয়েছেন এক কর্মকর্তা।

বিশ্বব্যাপী যুদ্ধের আশঙ্কা হ্রাসের কথা বলে ২০০৮ সালে ব্রিটেনে মোতায়েন করা সর্বশেষ পারমাণবিক অস্ত্র প্রত্যাহার করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। তবে সাম্প্রতিক ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা, বিশেষ করে ইউক্রেন যুদ্ধের পরিপ্রেক্ষিতে আবার পশ্চিমা দেশগুলোকে পারমাণবিক প্রস্তুতি জোরদারে বাধ্য করছে।

ট্যাকটিক্যাল নিউক মূলত সরাসরি যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যবহার উপযোগী, যা কৌশলগত বা দূরপাল্লার অস্ত্রের চেয়ে ভিন্ন। যুক্তরাজ্য এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে তার প্রতিরক্ষা কৌশলে বৈচিত্র্য আনতে এবং ফ্রান্স ও যুক্তরাষ্ট্রের মতো ন্যাটো মিত্রদের সঙ্গে সামঞ্জস্য বজায় রাখতে চায়।