যুক্তরাষ্ট্রে জন্মস্থান নীতিতে নাগরিকত্ব প্রশ্নে আদালতের রায়ে বিভ্রান্ত অভিবাসীরা

যুক্তরাষ্ট্রে জন্মস্থান ভিত্তিতে নাগরিকত্ব পাওয়ার বিষয়ে আদালতের রায় নিয়ে অভিবাসীদের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অনুরোধে সাড়া দিয়ে শুক্রবার (২৭ জুন) আদালতের রক্ষণশীল অংশ বিচারকদের ক্ষমতা হ্রাসের পক্ষে থাকলেও জন্মস্থান নীতির বিরুদ্ধে তার অবস্থানের বৈধতা নিয়ে কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেয়নি। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

মার্কিন সংবিধানের ধারা অনুযায়ী, বাবা অথবা মায়ের নাগরিকত্ব যা-ই হোক না কেন, যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে জন্মগ্রহণকারী প্রত্যেকে মার্কিন নাগরিকের স্বীকৃতি পাবে। তবে, গতকালের রায়ে অভিবাসীদের সব প্রশ্নের উত্তর স্পষ্ট বোঝা না যাওয়ায়, তারা আইনি সহায়তা প্রদানকারীদের কাছে ফোনের পর ফোন করে চলেছেন।

তাদের মতোই উদ্বিগ্ন এক অভিবাসী হচ্ছেন ২৪ বছর বয়সী লোরেনা। কলম্বিয়ার এই নাগরিক মার্কিন আশ্রয়ের জন্য আবেদন করেছেন এবং কিছুদিনের মধ্যেই তার সন্তান জন্মগ্রহণ করার কথা।

রয়টার্সকে তিনি বলেছেন, আমি জানি না, আমার বাচ্চাকে আমার জাতীয়তা (কলম্বিয়ান) দেওয়ার সুযোগ আর রয়েছে কিনা। আবার আমার আশ্রয় প্রার্থনার আবেদন কীভাবে যাচাই হবে, সেটাও বুঝতে পারছি না। আমার আশঙ্কা হচ্ছে, আমার সন্তান কোনও জাতীয়তা পাবে না।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ক্ষমতায় এসে একটি নির্বাহী আদেশ জারি করেন, যেখানে বলা হয়—যে-সব শিশু যুক্তরাষ্ট্রে জন্ম নিলেও তাদের পিতামাতার অন্তত একজন যদি মার্কিন নাগরিক বা বৈধ স্থায়ী বাসিন্দা  না হন, সেই শিশুদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে না।

এই আদেশ তিনটি ভিন্ন ফেডারেল আদালত স্থগিত করেছিল। কিন্তু সর্বোচ্চ আদালতের রায়ের পর এখন এটি ৩০ দিনের মধ্যে কার্যকর হতে পারে, যদিও নিম্ন আদালতে পরবর্তী আইনি লড়াই এখনও চলমান। শুক্রবার বিকেলে, বাদীপক্ষ আবার একটি সংশোধিত মামলা দাখিল করে যাতে সারা দেশব্যাপী সম্ভাব্য ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের পক্ষ থেকে আইনি লড়াই চালানো যায়।

এই নীতিমালা যদি পুরোদেশে স্থগিত না হয়, তাহলে মামলায় অংশ না নেওয়া ২৮টি অঙ্গরাজ্যে তা কার্যকর হয়ে যেতে পারে, যা পুরো দেশজুড়ে এক অসম ও বিভ্রান্তিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করবে বলে মনে করেন অভিবাসন বিশেষজ্ঞ ক্যাথলিন বুশ-জোসেফ।

তিনি বলেন, এটা এক ভয়াবহ জটিল আইনি পরিস্থিতি তৈরি করবে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাচনি প্রচারণার অন্যতম অঙ্গীকার ছিল কঠোর অভিবাসন নীতি। জন্মস্থান নীতিতে নাগরিকত্বের আকর্ষণে মার্কিন মুলুকে প্রচুর মানুষ আসে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

শুক্রবার হোয়াইট হাউজে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, জন্মস্থান নীতিতে নাগরিকত্বের কারণে প্রতিবছর হাজার হাজার মানুষ আমাদের দেশে আসছে। অথচ আইনটি এই উদ্দেশ্যে সৃষ্টি করা হয়নি।