মার্কিন হামলার কারণে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি সর্বোচ্চ বছর দুয়েকের জন্য পিছিয়ে গেছে বলে দাবি করেছে পেন্টাগন। বুধবার (২ জুলাই) মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রধান কার্যালয়টির এক মুখপাত্র শন পার্নেল এ কথা বলেন। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে পারনেল বলেন, প্রতিরক্ষা বিভাগের পর্যালোচনার পর আমরা বলতে পারি, তেহরানের পারমাণবিক কর্মসূচি এক থেকে দু বছরের জন্য পিছিয়ে গেছে।
মার্কিন হামলার সফলতা নিয়ে বিভিন্ন মহলে সন্দেহ দানা বেঁধে উঠছিল। তবে সে সব সংশয় দূর করতেই যেন কথাগুলো বলেন পারনেল। তবে, নিজের বক্তব্যের সমর্থনে কোনও প্রমাণ উপস্থাপন করেননি তিনি।
২২ জুন ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র। এসব হামলায় ৩০ হাজার পাউন্ড ওজনের বাংকার-বাস্টার বোমা ব্যবহার করা হয়।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হামলার পরপরই বলেছিলেন, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে গেছে। তার সুরেই গতকাল কথা বলেন পারনেল। অথচ, এ ধরনের হামলার পর তথ্য-উপাত্ত যাচাই করে পুরোপুরি নিশ্চিত একটি সিদ্ধান্তে আসতে মার্কিন গোয়েন্দাদের কয়েক সপ্তাহ পর্যন্ত সময় প্রয়োজন হতে পারে।
সংবাদ সম্মেলনে পারনেল দাবি করেছেন, এখন পর্যন্ত পাওয়া গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে আমরা নিশ্চিত, ইরানের ওই তিনটি পারমাণবিক স্থাপনা (ফরদো, নাতানজ ও ইস্পাহান) পুরো ধ্বংস হয়ে গেছে।
তবে আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থার (আইএইএ) প্রধান রাফায়েল গ্রোসি সম্প্রতি বলেন, ইরান কয়েক মাসের মধ্যেই আবার সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম উৎপাদন করতে পারে। তার এই মন্তব্যে মার্কিন হামলার কার্যকারিতা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়।
কয়েকজন বিশ্লেষক অনুমান করছেন, হামলার আগে ফরদো থেকে অস্ত্র-গ্রেড ইউরেনিয়াম সরিয়ে গোপন কোথাও সরিয়ে নিয়েছে ইরান। তবে মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ জানান, এ ধরনের গোপন স্থানান্তরের কোনও গোয়েন্দা তথ্য তার জানা নেই।
প্রাথমিকভাবে মার্কিন প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থা (ডিআইএ) বলেছিল, হামলার ফলে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি মাত্র কয়েক মাস পিছিয়ে যেতে পারে। কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তারা পরে জানান, সেই মূল্যায়ন পুরোপুরি সঠিক নয় এবং নতুন গোয়েন্দা তথ্য বলছে ইরানের কর্মসূচি মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
মার্কিন হামলার ফলে ফরদো পারমাণবিক স্থাপনায় মারাত্মক ক্ষতি হওয়ার কথা স্বীকার করেছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিবিএস নিউজকে মঙ্গলবার (১ জুলাই) দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ফরদোতে ঠিক কী হয়েছে, কেউ এখনও সঠিক জানে না। তবে যতটুকু তথ্য হাতে এসেছে, তার ভিত্তিতে বলতে পারি, স্থাপনাগুলো মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।