সোমালিয়ায় ১১৫ আল শাবাব জঙ্গি নিহতের দাবি

সোমালিয়ার দক্ষিণাঞ্চলে সরকারপন্থী বাহিনীর সঙ্গে আল শাবাব জঙ্গিগোষ্ঠীর তীব্র সংঘর্ষ হয়েছে। এতে আল শাবাবের অন্তত ১১৫ সদস্যের নিহত হওয়ার দাবি করেছে আঞ্চলিক গালমুডুগ সরকার।

সোমবার গালমুডুগ সরকারের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, পুন্টল্যান্ড সীমান্তের কাছে চারদিন লড়াইয়ের পর জঙ্গিরা পরাজিত হয়। খুব কম সংখ্যক জঙ্গি দুর্গম অঞ্চলের দিকে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে। লড়াই শেষে ১১০ জঙ্গিকে আটক করা হয়েছে।

নিরপেক্ষ কোনও সূত্রের মাধ্যমে সোমালিয়ার আঞ্চলিক সরকারের এই দাবির সত্যতা নিরূপণ করা সম্ভব হয়নি। ওই বিবৃতিতে সরকারপন্থী বাহিনীর হতাহতের কোনও সংখ্যা উল্লেখ করা হয়নি।

সোমালিয়ার মধ্যাঞ্চল ও দক্ষিণাঞ্চলে টিকতে না পেরে আল কায়েদার সঙ্গে সম্পৃক্ত এই গোষ্ঠীটি উত্তরাঞ্চলের দিকে সরে গেছে। সোমালিয়ার দক্ষিণাঞ্চলে আফ্রিকান ইউনিয়নের (এইউ) প্রায় ২২ হাজার সেনা আল-শাবাব জঙ্গিদের বিরুদ্ধে লড়াই করছে।

আফ্রিকার দেশ সোমালিয়ায় আল শাবাব বর্তমানে বেশ চাপের মুখে রয়েছে। চলতি মাসেই একাধিক ঘটনায় সংগঠনটির বহু সদস্যের প্রাণহানি ঘটে। মার্কিন ড্রোন হামলায় নিহত হয় আল শাবাবের প্রায় ১৫০ জন সদস্য। সপ্তাহ শেষে সোমালিয়ার রাজধানী মোগাদিসু থেকে ১৯৫ কিলোমিটার উত্তরে আল শাবাবের একটি প্রশিক্ষণ ক্যাম্প লক্ষ্য করে ড্রোন হামলা চালিয়ে ওই অপারেশন সফল করা হয়।

noname

পেন্টাগনের মুখপাত্র ক্যাপ্টেন জেফ ডেভিস জানান, আল-শাবাব জঙ্গি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে অপারেশন সফল হয়েছে। তারা সোমালিয়ায় মার্কিন ও আফ্রিকান ইউনিয়ন বাহিনীর ওপর বড় ধরনের হামলার পরিকল্পনা করেছিল।

ওই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী বশির ধুরে নামের এক রাখাল টেলিফোনে দ্য গার্ডিয়ানকে জানিয়েছেন, সোমালি এবং পশ্চিমা গোয়েন্দাদের আড়ালে থাকতে তারা এক গোপন আস্তানায় ঘাঁটি গেড়েছিলেন। কিন্তু শনিবার রাতে আকস্মিকভাবে সেখানে বিমান হামলা চালানো হয়। তিনি বলেন, ‘বৃহৎ বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যাচ্ছিল। আশেপাশের সব জায়গায় আগুণ লেগে যায়, আর কেউ কিছু বুঝে উঠতে পারছিলেন না। সকালের দিকে আমি ওই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ধোঁয়ার কুণ্ডলী দেখতে পাই। এটিকে পোড়া বাড়ির মতো দেখাচ্ছিল। সবকিছুই পুড়ে গিয়েছিল। আমি দেখলাম, তিনটি পুড়ে যাওয়া গাড়ি সেখানে পড়েছিল। আল-শাবাব সদস্যরা মরদেহগুলো সংগ্রহ করে ট্রাকে তুলে রাখছিল। এরপর তারা সেখান থেকে চইলে যায়। মরদেহগুলো কোথায় কবর দেওয়া হয়েছে সে সম্পর্কে আমরা কিছু জানি না।’

ইএক্সএক্স আফ্রিকার বিশ্লেষক রবার্ট ব্যাসেলিং বলেন, ‘১৫০ জন আল-শাবাব সদস্য নিহত হওয়ার বিষয়টি আল-শাবাবের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ আঘাত। তা সোমালিয়ায় তাদের আক্রমণাত্মক ক্ষমতাকেই প্রশ্নবিদ্ধ করে।’ তবে তাদের ওপর এই হামলা চলমান না থাকলে আল-শাবাব আরও শক্তিশালী হয়ে উঠতে পারে বলেও তিনি সতর্ক করেছেন।

উল্লেখ্য, ২০০৯ সালে বোকো হারামের তৎপরতা শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত অন্তত ২০ হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন। সেই সাথে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন আরও অন্তত ২৩ লাখ মানুষ। সূত্র: আল জাজিরা, বিবিসি, গার্ডিয়ান।

/এমপি/