নারীদের পশুর সঙ্গে যৌন কর্মকাণ্ডে বাধ্য করছেন ফরাসি শান্তিরক্ষীরা

মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রে শান্তিরক্ষীদের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগশান্তিরক্ষীদের ওপর যৌন নিপীড়নের অভিযোগের ধারাবাহিকতায় এবার মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী হিসেবে নিয়োজিত ফরাসি সেনাদের বিরুদ্ধে স্থানীয়দের ওপর ব্যাপক যৌন নিপীড়ন চালানোর অভিযোগ উঠেছে। বুধবার এক বিবৃতিতে জাতিসংঘ জানায়, তাদের কাছে এমন অভিযোগ এসেছে যে ফরাসি সেনারা আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রের নারীদেরকে পশুর সঙ্গে যৌন কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হতে বাধ্য করছেন। এ ধরনের অভিযোগের সত্যতার ব্যাপারে নিশ্চিত হতে তদন্ত চলছে বলেও জানানো হয়েছে।
শান্তিরক্ষীদের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের নতুন অভিযোগটি এনেছে মানবাধিকার সংগঠন এইডস-ফ্রি ওয়ার্ল্ড। সে অভিযোগের ভিত্তিতে জাতিসংঘের বিবৃতিতে বলা হয়, ২০১৩ সাল থেকে ২০১৫ সালের মাঝামাঝি সময়ে কেমো এলাকায় এসব ঘটনা ঘটে। তবে ঠিক কতজন নির্যাতনের শিকার হয়েছেন তা এখনও জানা যায়নি।
চলতি সপ্তাহে নিপীড়নের শিকার মানুষদের সঙ্গে কথা বলতে জাতিসংঘের একটি তদন্ত দল ঘটনাস্থলে যায়। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, তদন্ত চলাকালে বুরুন্ডি আর গ্যাবনের শান্তিরক্ষীদের তাদের ঘাঁটিতে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এইডস-ফ্রি ওয়ার্ল্ড একটি বেসরকারি সংস্থা। এটি মূলত শান্তিরক্ষীদের যৌন নিপীড়নের ঘটনাগুলো মনিটর করে থাকে। সংস্থাটি জানায়, ২০১৪ সালে তিন নারী জাতিসংঘের অধিকারবিষয়ক এক কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করে বলেছিলেন যে, ফরাসি সেনা কমান্ডার তাদের নগ্ন অবস্থায় একটি ক্যাম্পের ভেতর বেঁধে রেখেছিলেন এবং একটি কুকুরের সঙ্গে যৌন মিলনে বাধ্য করেছিলেন।

মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রে নিয়োজিত ফরাসি শান্তিরক্ষী

জাতিসংঘের কাছে দায়ের করা নতুন অভিযোগে বলা হয়, এক সেনা সদস্য চার নারীকে কুকুরের সঙ্গে যৌন মিলনে বাধ্য করেন। বৃহস্পতিবার একটি রুদ্ধদ্বার বৈঠকে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ অভিযোগগুলো শোনার কথা রয়েছে।

গতবছর জাতিসংঘের ১০টি মিশনের শান্তিরক্ষীদের বিরুদ্ধে শিশু ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নের ৬৯টি অভিযোগ ওঠে যা আগের বছরের চেয়ে বেশি। ২০১৪ সালে এই অভিযোগের সংখ্যা ছিল ৫২টি। যাদের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ উঠেছে, তাদের মধ্যে রয়েছে সামরিক সদস্য, আন্তর্জাতিক পুলিশ, অন্যান্য শাখার কর্মী ও স্বেচ্ছাসেবীরাও। জাতিসংঘের নিয়ম অনুযায়ী, কোনও শান্তিরক্ষীর বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ উঠলে, সংশ্লিষ্ট দেশই তার তদন্ত করবে এবং ব্যবস্থা নেবে। তবে ব্যাপক হারে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ ওঠায় এ ধরণের ঘটনা রোধে জাতিসংঘের ব্যর্থতারও অভিযোগ ওঠে। এই প্রেক্ষাপটে জাতিসংঘে একটি খসড়া প্রস্তাব পাস হয়। প্রস্তাব অনুযায়ী যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রমাণ পাওয়া যাবে, তাদের দেশে পাঠিয়ে দেয়া হবে। ওই অভিযোগ তদন্তে শান্তিরক্ষী কন্টিনজেন্টের গাফিলতি দেখা গেলে, পুরো দলটিকেই দেশে পাঠানো হবে।

এদিকে গত সোমবার নতুন দুটি যৌন নিপীড়নের ঘটনার কথা জানিয়েছে জাতিসংঘ। এর মধ্যে একটি অভিযোগ হলো বুরুন্ডি ও মরক্কোর সেনাদের দ্বারা ১৪ বছরের এক কিশোরীর যৌন নিপীড়নের শিকার হওয়ার ঘটনা।

মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রে আফ্রিকার বেশ কয়েক হাজার সেনা রয়েছে। এর মধ্যে বিভিন্ন অভিযোগে ১৪ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। সূত্র: বিবিসি, প্রেস টিভি

/এফইউ/বিএ/