পানামা পেপারস কেলেঙ্কারিতে আইসল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী সিগমুন্ডুর ডেভিড গুনলাগসন পদত্যাগ করার পর ক্ষমতাসীন জোট নতুন প্রধানমন্ত্রীর নাম ঘোষণা করেছে। একই সাথে অগ্রিম নির্বাচনের ঘোষণাও দেওয়া হয়।
৫ মার্চ দেশজুড়ে ব্যাপক গণবিক্ষোভের মুখে সিগমুন্ডুর পদত্যাগ করার পর কৃষিমন্ত্রী সিগুরদুর ইনগি জোহানসন ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেন। এবার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তার নামই প্রস্তাব করেছে ক্ষমতাসীন প্রগ্রেসিভ পার্টি। জোহানসন ওই দলটির দ্বিতীয় শীর্ষ নেতা। সিগমুন্ডুরের পদত্যাগ করার পর থেকেই আলোচিত হচ্ছিল যে, সিগুরদুর ইনগি জোহানসন পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন। গ্রীষ্মে অগ্রিম নির্বাচনের ঘোষণাও দিয়েছেন জোহানসন।
পানামার আইনি প্রতিষ্ঠান মোস্যাক ফনসেকার ফাঁস হওয়া নথিতে দেখা গেছে, আইসল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ও তার স্ত্রী কোটি কোটি ডলার ফাঁকি দিতে দেশের বাইরে এমন একটি প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করেছেন, যেখানে অর্থ পাচার ও কর ফাঁকি দেওয়ার সুযোগ রয়েছে। ওই নথি ফাঁস হওয়ার পর দেশজুড়ে ব্যাপক তোপের মুখে পড়েন আইসল্যান্ডের সিগমুন্ডুর। সরকারের বিরুদ্ধে আস্থা ভোটেরও আহ্বান জানায় বিরোধী দল।
এর আগে সিগমুন্ডুর ডেভিড গুনলাগসন-এর পদত্যাগের দাবিতে দেশটির রাজধানী রিকইয়াভিকে পার্লামেন্টের বাইরে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন ১০ হাজার মানুষ। প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে একটি অনলাইন পিটিশনে স্বাক্ষর করেন ২৮ হাজার মানুষ। উল্লেখ্য, আইসল্যান্ডের মোট জনসংখ্যা মাত্র তিন লাখ ৩০ হাজার।
পানামা পেপারসে ফাঁস হওয়া নথিতে দেখা যায় ২০০৭ সালে প্রধানমন্ত্রী ও তার স্ত্রী বিদেশে একটি কোম্পানি ক্রয় করেছেন। যে কোম্পানিটি আইসল্যান্ডের তিনটি ব্যাংকের বন্ডের মালিক ছিল। ওই বছর আর্থিক মন্দার সময় লোকসানের মুখে পড়ে ব্যাংক তিনটি বন্ধ হয়ে যায়। শুধু প্রধানমন্ত্রী ও তার স্ত্রী নন, তার মন্ত্রিসভার অনেক সদস্যেরও বিদেশে অবৈধ ও গোপন সম্পত্তি রয়েছে।
পানামা পেপারস ফাঁস হওয়ার আগে থেকেই দুর্নীতি ইস্যুতে আইসল্যান্ডের রাজনীতি উত্তপ্ত ছিল। চলতি বছরের শুরুতে এক জনমত জরিপে দেখা যায়, ৭০ শতাংশ আইসল্যান্ডার সিগমুন্ডুরকে ক্ষমতায় দেখতে চান না। সূত্র: বিবিসি।
/এসএ/