লিবিয়ায় ক্ষমতা হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত পাল্টালো স্বঘোষিত সরকার

লিবিয়ায় স্বঘোষিত সরকারকে সরানোর জন্য কাজ করছে জাতিসংঘলিবিয়ায় জাতিসংঘ সমর্থিত প্রেসিডেন্সি কাউন্সিলের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের ঘোষণা দেওয়ার পর আবারও অবস্থান পাল্টিয়েছে ত্রিপোলিভিত্তিক সরকার। ক্ষমতা হস্তান্তর না করতে বুধবার এক বিবৃতিতে মন্ত্রীদের আহ্বান জানিয়েছেন ত্রিপোলিভিত্তিক স্বঘোষিত প্রধানমন্ত্রী খলিফা ঘেইল।
বুধবার বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছিল, ত্রিপোলি সরকার জাতিসংঘ-সমর্থিত প্রেসিডেন্সি কাউন্সিলের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে যাচ্ছে বলে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। স্বঘোষিত ন্যাশনাল সালভেশন সরকার তাদের বিবৃতিতে বলেছে যে,রক্তপাত এড়াতে এবং দেশের বৃহত্তর স্বার্থে তারা তাদের মন্ত্রিসভা বিলুপ্ত করছে।
এর পর এক বিবৃতিতে ক্ষমতা না ছাড়ার প্রত্যয় জানান খলিফা ঘেইল। এক বিবৃতিতে মন্ত্রীদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন-‘জনস্বার্থের কথা মাথায় রেখে আপনাদের অনুরোধ করছি আইন মোতাবেক কাজ চালিয়ে যেতে।’ কেউ নতুন সরকারের সঙ্গে কাজ করলে তাকে বিচারের মুখোমুখি করারও হুমকি দিয়েছেন তিনি।
হঠাৎ করে ত্রিপোলি সরকারের সিদ্ধান্ত পাল্টালো কেন সে ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে তাদের মধ্যে বিভাজনের আভাস মিলেছে।


জাতিসংঘ সমর্থিত লিবিয়ান ঐক্য সরকারের সমর্থকেরা

২০১৪ সালে মিলিশিয়া বাহিনীর সাথে এক সংঘর্ষের পর লিবিয়ার নির্বাচিত সরকার ত্রিপোলি থেকে দেশের পূর্বাঞ্চলে পালিয়ে যায়। এরপর থেকে ইসলামপন্থী ন্যাশনাল সালভেশন সরকার সেখানকার নিয়ন্ত্রণ নেয়,যদিও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কখনোই তাদের স্বীকৃতি দেয়নি।
গত সপ্তাহেই জাতিসংঘ সমর্থিত সরকারের প্রধানমন্ত্রী ফায়েজ আল সিরাজ ত্রিপোলিতে পৌঁছান। এরপর থেকে তারা ত্রিপোলির একটি নৌঘাঁটিতে অবস্থান করছেন। তবে লিবিয়ার উত্তর পূর্বাঞ্চলের তবরুক অঞ্চলে এখনও একটি স্বঘোষিত সরকার রয়ে গেছে। তারাও জাতিসংঘ সমর্থিত ঐক্য সরকারকে মেনে নেয়নি।
সিরাজসহ নয় সদস্যের একটি কাউন্সিল এই সরকার পরিচালনা করবে। লিবিয়ায় এখনো একাধিক সরকার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে তাদের কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে।

উল্লেখ্য,চার বছর আগে ন্যাটো সমর্থিত এক বিদ্রোহের মধ্য দিয়ে লিবিয়ার নেতা মুয়াম্মার গাদ্দাফিকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকে দেশটিতে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। বেশ কয়েকটি সশস্ত্র গোষ্ঠীর মধ্যে তৈরি হওয়া সংঘাত রূপ নেয় গৃহযুদ্ধে। লিবিয়া সংকট সমাধানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নানা পদক্ষেপও উল্লেখযোগ্য কোনও ইতিবাচক ফল বয়ে আনতে পারেনি। সংঘাত রয়েই গেছে। জাতিসংঘ সমর্থিত ঐকমত্যের সরকারকে প্রাথমিকভাবে প্রত্যাখ্যান করে দেশটির পার্লামেন্ট। চলমান অস্থিরতা নিরসনে জাতিসংঘের উদ্যোগে বিবাদমান পক্ষগুলোর মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে গত ডিসেম্বরে নতুন ওই সরকার গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। সূত্র: আল জাজিরা

/এফইউ/