পতিতা নয়, খদ্দেরদের শাস্তির বিধান রেখে ফ্রান্সে আইন পাস

ফ্রান্সে পতিতাবৃত্তির খদ্দেরদের শাস্তির বিধানের বিরুদ্ধে যৌনকর্মীদের প্রতিবাদপতিতাবৃত্তি নয়, বরং অর্থের বিনিময়ে যৌন সম্পর্ক প্রতিষ্ঠাকে অবৈধ উল্লেখ করে এবং খদ্দেরদের জরিমানার বিধান রেখে ফ্রান্সের পার্লামেন্টে আইন পাস হয়েছে। দুই বছর ধরে বিতর্কিত এ আইনটি পাসের চেষ্টা চললেও পার্লামেন্টের দুই কক্ষের মতবিরোধ থাকার কারণে এতোদিন তা পাস করা যাচ্ছিলো না।
বুধবার পার্লামেন্টের নিম্ন কক্ষে চূড়ান্ত ভোটাভুটিতে ৬৪-১২ ভোটে আইনটি পাস হয়। ১১জন ভোট দেওয়া থেকে বিরত থাকেন। তবে চূড়ান্ত বিতর্কের দিনেও আইনটির বিরোধিতা করে পার্লামেন্টের সামনে বিক্ষোভ করেছেন যৌনকর্মীরা।
নতুন আইনে যারা কোন যৌনকর্মীর কাছ থেকে সেবা নেবেন, সেই ক্রেতা বা খদ্দেরদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে দেড় হাজার ইউরো জরিমানা আদায় করা হবে। বার বার একই কাজ করলে যৌনক্রেতাদের কাছ থেকে ৩ হাজার ৭৫০ ইউরো পর্যন্ত জরিমানা আদায় করা হতে পারে। জরিমানার পাশাপাশি যৌনকর্মীদের নানা সমস্যার বিষয়ে এই দণ্ডপ্রাপ্তদের বাধ্যতামূলক ক্লাসেও অংশ নিতে হবে।
উল্লেখ্য, সুইডেন হলো প্রথম দেশ যারা পতিতাবৃত্তিকে অবৈধ ঘোষণা না করে অর্থ দিয়ে যৌনসম্পর্ক প্রতিষ্ঠাকারীদের সাজার বিধান জারি করেছিল। সুইডেনের দাবি, এরফলে তাদের দেশে যৌনকর্মীদের সংখ্যা কমেছে। এই ধারাবাহিকতায় ফ্রান্সে পাস হওয়া নতুন আইনের সমর্থনে দেশটির সমাজতান্ত্রিক দলের এমপি মাউদ অরিভার বার্তা সংস্থা এপিকে বলেন, ‘এই আইনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো আমরা যৌনকর্মীদের পাশে দাঁড়াতে চাই। আমরা তাদের পরিচয়পত্র দিতে চাই, কেননা আমরা জানি যারা এই পেশায় যুক্ত তাদের অধিকাংশই মানবপাচারের শিকার।’

তবে আইনের বিরুদ্ধে যৌনকর্মীদের একটি দল পার্লামেন্টের বাইরে সমাবেশ করেছে। তাদের হাতে থাকা ব্যানারে লেখা ছিল, 'আমাকে নিয়ে চিন্তা করার কিছু নাই। আমি নিজেই নিজের দেখভাল করতে পারবো।' স্ট্রস সেক্স ওয়ার্কার’স ইউনিয়ন নামে যৌনকর্মীদের এক সংগঠনের অভিযোগ, ‘আইনটি বাস্তবায়িত হলে ৩০ হাজার থেকে ৪০ হাজার যৌনকর্মী জীবিকা নষ্ট হবে।’

তবে আইনটির সমর্থকদের দাবি, এ আইন কার্যকর হলে যেসব যৌনকর্মী এই পেশা ছেড়ে যেতে চান, তারা তা করার সুযোগ পাবেন। বিদেশি কোনও যৌনকর্মী যদি যৌনপেশা ছেড়ে অন্য কাজ করতে চান তারাও এ আইনের আওতায় ফ্রান্সে সাময়িক বসবাসের সুযোগ পাবেন। তাছাড়া্ মানব পাচারকারীদের বিরুদ্ধে আইনটি সহায়ক হবে বলেও দাবি করেন তারা। সূত্র: বিবিসি

/এফইউ/বিএ/