জলবায়ু চুক্তিতে স্বাক্ষর করলো বাংলাদেশসহ শতাধিক দেশ

চুক্তিতে স্বাক্ষর করছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরিব্যাপক আশা-আকাঙ্ক্ষাকে প্রতিফলিত করে অবশেষে স্বাক্ষরিত হলো ঐতিহাসিক প্যারিস জলবায়ু চুক্তি। শুক্রবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দফতরে বাংলাদেশসহ বিশ্বের ১৭১টি দেশের প্রতিনিধিরা এ সমঝোতা চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। নতুন কোনও আন্তর্জাতিক চুক্তির জন্য এই সংখ্যাটি একটি রেকর্ড বলে উল্লেখ করেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। গত ডিসেম্বরেই এ চুক্তি স্বাক্ষরের ব্যাপারে সমঝোতায় পৌঁছেছিলেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, এরইমধ্যে ১৫টি দেশ অভ্যন্তরীণভাবে চুক্তিটি অনুমোদন করলেও চুক্তিটি কার্যকরের জন্য বাকি দেশগুলোকেও দ্বিতীয় এ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হবে। অর্থাৎ যার যার দেশের পার্লামেন্টে বিতর্ক ও আলোচনার মধ্য দিয়ে চুক্তিটি অনুমোদন করাতে হবে। আর বার্তা সংস্থা ইউনাইটেড নিউজ- ইউএনবি বাংলাদেশের পক্ষে পরিবেশ ও বনমন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর চুক্তি স্বাক্ষরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। 
আরও পড়ুন: জলবায়ু চুক্তি একটা প্রতারণা!
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তৃতায় জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন বলেন, ‘প্যারিস গভীরভাবে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জীবনধারা আকার নির্ধারণ করে দেবে। সেই ভবিষ্যত গঠন করে দেবে যা এতোদিন ঝুঁকির মুখে ছিল।’
পৃথিবী এখন রেকর্ড তাপমাত্রার অভিজ্ঞতা অর্জন করে চলেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দৌড়াচ্ছি। জাতীয় পর্যায় থেকে এই চুক্তিতে যোগ দেওয়ার জন্য আমি সব রাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানাই। আজ আমরা ভবিষ্যতের জন্য একটি নতুন চুক্তিতে সই করছি।’
বিশ্বব্যাপী ৪৬তম বিশ্ব ধরিত্রী দিবস উদযাপনের মধ্যে জাতিসংঘের জলবায়ু বিষয়ক প্রধান ক্রিস্টিয়ানা ফিগারেস এখন সবার করণীয় কী সেই বিষয়গুলো ব্যাখ্যা করেন। আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রে বাড়ছে আত্মহত্যার হার
বক্তব্য রাখছেন জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন
তিনি বলেন, ‘সবার না হলেও বেশিরভাগ দেশের যা করা দরকার তা হচ্ছে, সই হওয়া চুক্তির নথিগুলো দেশে নিয়ে অনুমোদনের প্রক্রিয়া শুরু করা। কেননা, বেশিরভাগ দেশকেই এ বিষয়ে সংসদীয় আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’

কয়েক বছর আগেও জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ন্ত্রণ করতে একটি বৈশ্বিক চুক্তি সইয়ের ধারণাটি প্রায় অসম্ভব ছিল। কিন্তু এখন নৈতিকভাবে সবাই বিষয়টি নিয়ে একমত হয়েছেন।

গত বছরের ডিসেম্বরে প্যারিসে জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলনে ঐতিহাসিক জলবায়ু চুক্তিতে একমত হন বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা। বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির হার ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে রাখতে একমত হন তারা। এর মধ্য দিয়ে কার্বন নিঃসরণ কমাতে এই প্রথম বিশ্বের বিভিন্ন দেশ মতৈক্যে পৌঁছায়। 
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রে একই পরিবারের ৮ জনকে হত্যা
এ চুক্তিকে জীবাশ্ম জ্বালানিভিত্তিক অর্থনীতিকে কয়েক দশকের মধ্যে রূপান্তরের জন্য ঐতিহাসিক পদক্ষেপ হিসেবে অভিহিত করা হচ্ছে। চুক্তি অনুযায়ী ২০২০ সাল থেকে কার্বন নিঃসরণ কমাতে শুরু করবে দেশগুলো। উন্নয়নশীল দেশগুলোকে সহায়তার জন্য ধনী দেশগুলোকে ২০২০ সালের পর থেকে প্রতিবছর ১০ হাজার কোটি ডলার দেওয়ার কথা বলা হয়েছে এতে। এছাড়া গ্রিন হাউস গ্যাস নির্গমন কমাতে বিভিন্ন দেশের প্রতিশ্রুতি ঠিকমত পালন হচ্ছে কি না পাঁচ বছর অন্তর তা পর্যালোচনার বিধান থাকছে। সূত্র: বিবিসি

/এফইউ/