প্রশিক্ষণ শিবিরে সোমালি সেনাবাহিনীর দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ

আরব আমিরাতের উদ্যোগে এক সময় স্থাপিত একটি সেনা প্রশিক্ষণকেন্দ্রে সোমালিয়ার সেনাবাহিনীর দুটি পক্ষ সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছিল। দেশটির রাজধানী মোগাদিসুতে অবস্থিত প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটি ধ্বংস করে দিতে উদ্যত সেনাবাহিনীর একটি পক্ষকে অপর পক্ষ বাধা দিতে গেলে সংঘর্ষের ওই ঘটনা ঘটে। বার্তাসংস্থা রয়টার্স লিখেছে, সংঘর্ষের ওই ঘটনাই প্রমাণ করে ১৯৯১ সাল থেকে কার্যত অনুপস্থিত কেন্দ্রীয় শাসন ব্যবস্থার অভাবে একটি সুসংগঠিত সেনাবাহিনী গড়ে তোলা সেখানে কতটা দুঃসাধ্য।s4.reutersmedia.net

সোমালিয়াকে ঘনিষ্ঠভাবে সহায়তা করছিল মধ্যপ্রাচ্যের দেশ আরব আমিরাত। কিন্তু ইরান ও কাতারকে কেন্দ্র করে মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে সৌদি আরবের মেরুকরণের জেরে সোমালিয়া সম্প্রতি আরব আমিরাতের সঙ্গে আগের মতো উষ্ণ  কূটনৈতিক সম্পর্ক রক্ষা করতে পারছে না। ইরানের পক্ষ নেওয়ার অভিযোগ ওঠা কাতারের বিরুদ্ধে সৌদি আরব যে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে তাতে সমর্থন আছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের। সোমালিয়া ও আরব আমিরাতের সম্পর্ক অনেক বড় ধাক্কা খেয়েছিল গত মাসে। তখন আরব আমিরাত, সোমালিয়া ও ইথিওপিয়ার মধ্যে বারবেরা বন্দর ব্যবস্থাপনা নিয়ে হওয়া চুক্তি ভেঙে দিয়েছিল সোমালিয়া। তাদের দাবি ছিল, ওই চুক্তি সোমালিয়ার অখণ্ডতার প্রতি হুমকি। এরপর সোমালিয়া আরব আমিরাতের দ্বারা প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সেনাসদস্যদের বেতন দেওয়ার বিষয়টি সম্পূর্ণ নিজের হাতে তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। ২০১৪ সালের চুক্তি অনুযায়ী এতদিন তা আরব আমিরাতের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হতো। তারপর, সোমালিয়ার সেনাবাহিনী আরব আমিরাতের বিপুল পরিমাণ অর্থ ও অর্থবহনকারী বিমানটি জব্দ করেছিল। আরব আমিরাত দাবি করেছিল, ওই অর্থ সোমালিয়ায় প্রশিক্ষণ দেওয়া সেনাসদস্যদের বেতনের জন্য নিয়ে গিয়েছিল তারা। ওই ঘটনার পর থেকে সোমালিয়ার সেনাবাহিনীকে আর সেনা প্রশিক্ষণে কোনও সহায়তা দিচ্ছে না আরব আমিরাত।

আরব আমিরাতের সদ্য বিলুপ্ত প্রশিক্ষণ কর্মসূচীতে প্রশিক্ষণ পাওয়া একজন সোমালি সেনাসদস্য আহমেদ নূর রয়টার্সকে বলেছেন, ‘তারা আমাদের ওপর হামলা করেছিল। তারা চেয়েছিল লুটতরাজ চালাতে। কিন্তু আমরা তাদের ঠেকিয়ে দিয়েছি।’ ৯০ মিনিট ধরে উভয় পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি চলে এবং পরে প্রেসিডেন্সিয়াল গার্ডের সেনারা এসে প্রশিক্ষণ ঘাঁটিটি  নিরাপত্তা নিশ্চিত করে।

রয়টার্স লিখেছে, শেষ পর্যন্ত আরব আমিরাতের তৈরি করা প্রশিক্ষণ ঘাঁটিটি হামলাকারী সেনাসদস্যদের হাত থেকে রক্ষা করা গেলেও, আরব আমিরাতের প্রশিক্ষণ দেওয়া বেশ কিছু সেনা সদস্যকে হামলা শুরুর পর পালিয়ে যেতে দেখা গেছে। এদের একজন আব্দিরহমান আব্দুলাহি রয়টার্সকে বলেছেন, ‘আমার বেশিরভাগ সঙ্গী তাদের অস্ত্র নিয়ে দেওয়াল টপকে পালিয়ে গেছে। অন্যরা বন্দুক নিতে না পেরে খালি হাতে পালিয়েছে। সে জন্য আমাকেও সবার সঙ্গে চলে যেতে হয়েছিল।’