সুদানে অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভে গুলি, নিহত ৭

সুদানে সোমবারের সামরিক অভ্যুত্থানের পর দেশটিতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখলের খবর ছড়িয়ে পড়তেই রাজধানী খার্তুমসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে রাজপথে নেমে আসে বিক্ষুব্ধ জনতা। এক পর্যায়ে বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালায় সেনাবাহিনী। এতে অন্তত সাত বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন কমপক্ষে আরও ১৪০ জন। মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

বিভিন্ন স্থানে টায়ার পুড়িয়ে রাস্তা বন্ধ করে দেয় আন্দোলনকারীরা। বিক্ষোভের তীব্রতায় এক পর্যায়ে খার্তুম বিমানবন্দর বন্ধ করে দেওয়া হয়। ফলে সেখানে সব আন্তর্জাতিক ফ্লাইট স্থগিত রয়েছে। বন্ধ রয়েছে ইন্টারনেট ও অধিকাংশ ফোনের সংযোগ।

এদিন সেনাসদস্যদের গুলিতে আহত হওয়া একজন বিক্ষোভকারী সাংবাদিকদের জানান, সেনাসদরের বাইরে তার পায়ে গুলি চালানো হয়।  

তিনি বলেন, সেনারা প্রথমে স্টান গ্রেনেডের বিস্ফোরণ ঘটায়। তারপর গুলি ছোড়ে। আল-তায়েব মোহাম্মদ আহমেদ নামের একজন বলেন, ‘চোখের সামনে দুই জন মানুষ নিহত হয়েছে।’

খার্তুমের একটি হাসপাতালে রক্তাক্ত পোশাক ও আঘাতের চিহ্ন রয়েছে, এমন বহু মানুষকে দেখা গেছে।

টুইটারে দেওয়া এক পোস্টে বিরোধীদলীয় জোট ‘ফোর্সেস অব ফ্রিডম এন্ড চেঞ্জ’ জানিয়েছে, সামরিক বাহিনীকে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করতে তারা শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ, সড়ক অবরোধ ও অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দিয়েছে।

সোমবারের বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে রাজধানী খার্তুমে ব্যাপক ধরপাকড় চালানো হয়। সেনাসদস্যরা ঘরে ঘরে গিয়ে স্থানীয় বিক্ষোভের আয়োজকদের আটক অভিযানে নামে।

২০১৯ সালে দীর্ঘদিনের প্রেসিডেন্ট ওমর আল বশিরকে সরিয়ে দেওয়ার পর ক্ষমতা ভাগাভাগির দুর্বল একটি চুক্তিতে উপনীত হয় সামরিক বাহিনী ও বেসামরিক গোষ্ঠীগুলো। ওই চুক্তির আলোকেই গত দুই বছর ধরে দেশটি পরিচালিত হয়ে আসছিল। গত সেপ্টেম্বরে ব্যর্থ এক অভ্যুত্থান চেষ্টা চালায় ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট বশিরের অনুগত সেনারা। ওই ঘট্নায় সরকারের সামরিক ও বেসামরিক অংশগুলো বিভক্ত হয়ে পড়ে। উভয়  পক্ষের মধ্যে আস্থার সংকট দেখা দেয়। এর মধ্যেই সোমবার ভোরে দেশটিতে অভ্যুত্থানের খবর আসে।

এই অভ্যুত্থানের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটি বলছে, এর ঘটনায় সুদানের গণতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হবে। চলমান পরিস্থিতি নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছে আফ্রিকান ইউনিয়ন। সংকট উত্তরণে সামরিক ও বেসামরিক দলের প্রতিনিধিদের অবিলম্বে সংলাপে বসার তাগিদ দিয়েছে ইউনিয়ন নেতারা।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)-এর পররাষ্ট্র বিষয়ক প্রধান জোসেফ বোরেল বলেন, দেশটিকে আগের অবস্থানে ফেরাতে আঞ্চলিক সহযোগী দেশগুলোকে এক হয়ে কাজ করার বিকল্প নেই।