‘পুলিশের অবিচারের’ প্রতিবাদে গায়ে আগুন দিয়ে ফুটবলারের আত্মহত্যা

তিউনিসিয়ায় ‘পুলিশের অবিচারের’ প্রতিবাদে গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন পেশাদার এক ফুটবলার। সপ্তাহের শুরুতে এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে ফুটবলারের পরিবার।

ফুটবলারের নাম নিজার ইসাউই। ৩৫ বছরের নিজারের শরীরের বেশিরভাগ অংশই আগুনে পুড়ে যায়।

নিজারের ভাই শুক্রবার বলেন, ‘তিউনিসের বিশেষজ্ঞ বার্ন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তবে চিকিৎসকরা তার জীবন বাঁচাতে পারেনি। সে বৃহস্পতিবার মারা গেছে। আজ দাফন  হবে।’

নিজার ইউএস মোনাস্তিরের সাবেক খেলোয়াড়। চার সন্তানের পিতা নিজার ফেসবুক এক ভিডিও-তে বলেছিলেন, মধ্য তিউনিসিয়ার কাইরুয়ানের হাফুজ গ্রামে সন্ত্রাসবাদের মিথ্যা অভিযোগ আনা হচ্ছে। 

ইজারের প্রতিবাদটি ফুটপাতের দোকানদার মোহাম্মদ বোয়াজিজির কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে, যিনি ২০১০ সালের ১৭ ডিসেম্বর আগুন দিয়ে আত্মহত্যা করেছিলেন। এই ঘটনা তিউনিসিয়ার বিপ্লবের জন্ম দিয়েছিলেন যা আরব বসন্ত নামে পরিচিত। এই আরব বসন্তে মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে কর্তৃত্ববাদী নেতাদের পতন ঘটে।

তিউনিসিয়ার সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, নিজারের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে হাফুজ শহরের রাস্তায় নামে সাধারণ মানুষ। তরুণ বিক্ষোভকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ঢিল ছুড়লে, কাঁদানে গ্যাস দিয়ে জবাব দেয় পুলিশ।

বিশ্বজুড়ে চলা অর্থনৈতিক মন্দার ঢেউ লেগেছে তিউনিসিয়াতেও। এই অবস্থায় ১০ দিনারে এক ডজন কলা কিনতে না পারার অভিযোগ করেছিলেন নিজার। এই দাম সরকার নির্ধারণ করে দিয়েছিল। এর পর পুলিশ নিজারকে সন্ত্রাসের অভিযোগে অভিযুক্ত করে। প্রতিবাদে তিনি বিক্ষোভ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।

অর্গানাইজেশন ফর ইকোনমিক কোঅপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট বলছে, এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে তিউনিসিয়া। দেশটিতে মূল্যস্ফীতি ১১ শতাংশের কাছাকাছি। খাদ্য ক্রমবর্ধমান দুষ্প্রাপ্য হয়ে উঠছে।

১ দশমিক ৯ বিলিয়ন ডলারের ঋণ চুক্তির জন্য আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের সঙ্গে আলোচনা করছে তিউনিসিয়ার সরকার। কোভিড-১৯ মহামারি এবং ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে দেশটির বাজেট ঘাটতি আরও বেড়েছে।

গায়ে আগুন দেওয়ার কিছুক্ষণ আগে একটি ফেসবুক পোস্টে নিজার বলেছিলেন, ১০ দিনারে কলা বিক্রি বিরোধীতা করায় সন্ত্রাসের অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছি।

তিনি বলেছিলেন, ‘নিজেকে মৃত্যুদণ্ডের সাজা দিয়েছি। আমার আর শক্তি নেই। পুলিশকে জানিয়ে দিন, আজ কার্যকর হবে সাজা।’

সূত্র: আল জাজিরা