মার্কিন নির্বাচনের আগে আসছে না মডার্না’র টিকা

মার্কিন ফার্মা জায়ান্ট মডার্নার করোনাভাইরাসের টিকা কবে আসবে তা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে ব্যাপক আলোচনা চলছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বারবার ৩ নভেম্বরের নির্বাচনের আগে করোনার টিকা আসার কথা বললেও ভ্যাকসিন উৎপাদনে যুক্তরাষ্ট্রে এগিয়ে থাকা মডার্নার সিইও স্টিফেন ব্যানসেল ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে বুধবার জানিয়েছেন, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে তাদের টিকা আসবে না। সেফটি ট্রায়ালের পরে নভেম্বরের শেষে টিকা আসার দিন ঘোষণা হতে পারে। আর তাদের সহযোগী সংস্থা সুইস কোম্পানি লোনজা জানিয়েছে, ২০২০ সালেই টিকা আনতে পারে মডার্না। মার্কিন সংবাদমাধ্যম এসোসিয়েটেড প্রেস (এপি) এখবর জানিয়েছে।

000000

সিইও স্টিফেন ইঙ্গিত দিয়েছেন, ২৫ নভেম্বরের পরে টিকা নিয়ে আসতে পারে মডার্না। তিনি জানান, তিন স্তরে ট্রায়ালে টিকার ফলাফল খুবই ইতিবাচক। তাই জরুরি ভিত্তিতে তাড়াতাড়ি টিকা নিয়ে আসার দরকার নেই। চূড়ান্ত পর্বের ট্রায়াল শেষ করে সেফটি ট্রায়ালের রিপোর্ট ভালো হলেই বিস্তারিত তথ্য পাঠানো হবে মার্কিন ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনকে (এফডিএ)।

ভ্যাকসিন দৌড়ে এগিয়ে থাকার চেয়েও মানুষের সুরক্ষা বেশি জরুরি বলে জানিয়েছেন স্টিফেন। তিনি আরও বলেছেন, অক্টোবরের শেষ থেকে টিকার বিপুল উৎপাদনের প্রস্তুতি শুরু হয়ে যাবে। ততদিনে টিকার ডোজ সম্পর্কে নিশ্চিত ধারণা পাওয়া যাবে। টিকার ভায়াল মাইনাস ৭০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করে রাখা হবে।

মডার্না এর আগে জানিয়েছিল, ১৮ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে শুধু সুস্থ ব্যক্তিদের শরীরেই টিকার ট্রায়াল হবে। ক্যানসার রোগী ও এইচআইভি রোগীদের টিকা দেওয়া হবে না। পরিবর্তিত গাইডলাইনে মডার্না জানায়, মেসেঞ্জার আরএনএ (রাইবোনিউক্লিক অ্যাসিড) সিকুয়েন্সকে কাজে লাগিয়ে তৈরি এমআরএনএ-১২৭৩ ভ্যাকসিন এইচআইভি রোগীদের শরীরেও নিরাপদ। সেফটি ট্রায়ালে প্রমাণ পাওয়া গেছে। তাই কম ডোজের ইঞ্জেকশন দিয়ে রোগীদের পর্যবেক্ষণে রাখা হবে।

মডার্নার তৈরি এমআরএনএ-১২৭৩ ভ্যাকসিনের প্রথম পর্যায়ের ট্রায়ালের রিপোর্ট সামনে এসেছে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটিরও আগে। এই টিকাও মানুষের শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি করেছে বলে জানা গেছে।

স্টিফেন ব্যানসেল জানান, তৃতীয় ও চূড়ান্ত পর্বে টিকার ট্রায়াল চলছে। ৩০ হাজার জনকে টিকা দেওয়া হচ্ছে। এই ট্রায়ালের তত্ত্বাবধানে রয়েছে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথ (এনআইএচ) ও বায়োমেডিক্যাল অ্যাডভান্সড রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অথরিটি।

ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব অ্যালার্জি অ্যান্ড ইনফেকসিয়াস ডিজিজের ডিরেক্টর এবং হোয়াইট হাউসের স্বাস্থ্য উপদেষ্টা অ্যান্থনি ফাউচির তত্ত্বাবধানে এমআরএনএ ভ্যাকসিন উদ্ভাবন করেছে মডার্না। এই গবেষণায় রয়েছেন এনআইএইচের অধীনস্থ ভ্যাকসিন রিসার্চ সেন্টারের বিজ্ঞানীরা। সুইজারল্যান্ডের অন্যতম বড় ভ্যাকসিন ও ওষুধ নির্মাতা সংস্থা লোনজা গ্রুপ এজির সঙ্গে ১০ বছরের চুক্তিও হয়েছে মডার্নার।

সিইও স্টিফেন জানিয়েছেন, তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালে অনেক বড় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এইচআইভি রোগীদের শরীরে টিকার প্রয়োগ শুরু হয়েছে। এই সাফল্য সার্বিকভাবে এলে টিকার কার্যকারিতা ও নিরাপত্তা নিয়ে কোনও সন্দেহ থাকবে না।